হামলা করতে গিয়ে তেহরানের প্রেমে পড়েছেন ইসরায়েলের পাইলট

হামলা শেষে ঘাঁটিতে ফিরে এসে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ওই পাইলট। নিরাপত্তার কারণে তার পুরো নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ১৩-২৪ জুন পর্যন্ত চলা এই অভিযানে ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল।
ওই পাইলট বলেন, বহু বছর ধরে এই অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। মনেপ্রাণে চাইছিলাম যেন হয়তো এ অপারেশনের প্রয়োজনই না হয়। তিনি জানান, অভিযান শুরু হওয়ার আগের রাতে তিনি একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলনে ছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার পরিবার, সহকর্মী ও অতিথিরা।
ঠিক তখনই একটি বার্তা আসে– ‘আগামীকাল ভোরে স্কোয়াড্রনে রিপোর্ট করুন। ইরানে প্রতিরোধমূলক হামলা শুরু।’ সেই মুহূর্তের অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘সবার সামনে স্বাভাবিক থাকার অভিনয় করতে হয়েছে, কারণ একটুও গোপন ফাঁস হলে পুরো মিশন ব্যর্থ হয়ে যেতে পারত।’ আরও পড়ুনঃ যুদ্ধ বিরতির পর প্রথম ভাষণে যা বললেন খামেনি ভোরবেলা সন্তানদের চুমু দিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় স্ত্রী শুধু বলেন, ‘যা করতেই হবে করো, আমরা আছি পাশে।
স্ত্রীর সঙ্গে তখনকার আলিঙ্গন ছিল এক ধরনের অক্সিজেন।’ পাইলট বলেন, ‘তেহরানকে এতটা কাছে থেকে আগে কখনও দেখা হয়নি। আকাশ থেকে শহরটাকে খুব শান্ত ও সুন্দর মনে হচ্ছিল। শহরটি নীরব। কেউ হয়তো নিচে আতঙ্কে ছিল, কিন্তু ওপর থেকে মনে হচ্ছিল নির্জন দুপুর। তিনি আরও বলেন, ইরানের পাহাড়ঘেরা দৃশ্যগুলো ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। এই অভিযানে অংশ নিতে গিয়ে আমাদের দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে হয়েছে, মাঝপথে জ্বালানি ভরার মতো জটিল কাজও ছিল।
পুরো সময়জুড়ে রেডিও নীরবতা বজায় রাখতে হয়, যেন কেউ অপারেশনের তথ্য বুঝে না ফেলে। আরও পড়ুনঃ যুক্তরাষ্ট্র জোহারান মামদানি ট্রাম্পের নতুন ভয় পাইলট বলেন, ‘আমরা জানতাম, শত্রু শুধু বিপজ্জনকই নয়, অত্যন্ত চতুরও। তাই প্রতিটি সম্ভাব্য ত্রুটি ও আক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েই ফ্লাইট পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’
ইরান থেকে ফিরে এসে মাটিতে অবতরণ করেই পাইলট জানান, ইসরায়েলিদের প্রযুক্তি, দক্ষতা, সাহস সবকিছুই এই মিশনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। যদি আমরা ঐক্য ও শিক্ষার ওপর এই মনোযোগ দিতে পারি, তাহলে আরও অনেক কিছু সম্ভব। সবশেষে তিনি একটি শান্তির বার্তাও দেন। বলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করি না। আমরা হামলা করেছি তাদের বিরুদ্ধে, যারা আমাদের ধ্বংস করতে চায়। একদিন শান্তি আসবে, আমরা একসঙ্গে উন্নতি করব।