দেশে ফিরছেন তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরছেন- রাজনৈতিক অঙ্গনে এ আলোচনা এখন তুঙ্গে। যদিও দলের শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি।
তবে দলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামী বছর অনুষ্ঠ্যেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার আগেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। আর দেশে ফিরেই ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করাবেন। সূত্রটি জানায়, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডনে ছিলেন। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর এই দম্পতি বাংলাদেশ ছাড়েন। ফলে দুজনের কেউই তখন ভোটার হতে পারেননি। তবে কিছুদিন আগে দেশে ফিরে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে ভোটার হয়েছেন ডা. জুবাইদা রহমান। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘তারেক রহমান ভোটার হয়েছেন কি না আমার জানা নেই। ভোটার হলে জানতাম। তবে ওনার ওয়াইফ এনআইডির জন্য সব ধরনের তথ্য আমাদের কাছে দিয়েছেন, ভোটার হয়েছেন এবং স্মার্টকার্ড পেয়েছেন। তবে তারেক রহমান এখনো ভোটার হননি।’ ইসির তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করতে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশে কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারেও ভোটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তারেক রহমান সেখানে ভোটার হাওয়ার জন্য এখনো আবেদন করেননি বলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখা থেকে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লন্ডনে প্রবাসীদের নতুন ভোটার হতে গেলে আবেদনকারীকে অবশ্যই লন্ডনের নির্বাচন অফিসে আসতে হবে। কারণ আবেদনকারীর স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ বাধ্যতামূলক। লন্ডনে তারেক রহমান এখনো আবেদন করেননি বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি প্রদানের কার্যক্রম চলমান। ইসির মিশন অফিসে যে কোনো সময় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ভোটার হতে পারবেন প্রবাসীরা। এসব দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৮ হাজার ৩২ জন প্রবাসী ভোটার হতে আবেদন করেন। এর মধ্যে মিশন অফিস ২৯ হাজার ৬৪৬ জনের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করেছে। ১৭ হাজার ৩৬৭ জনকে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। আবেদন বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৫৬ জনের। ৪ হাজার প্রবাসীর ভোটার হওয়ার আবেদন যাচাই-বাছাই করছে ইসি। তবে এসব তালিকায় নাম নেই তারেক রহমানের। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তারেক রহমান চাইলে লন্ডনে বসেও ভোটার হতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে ভোটার কার্যক্রম চালু আছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারেক রহমান লন্ডনে ভোটার হবেন না। তিনি বাংলাদেশে এসেই ভোটার হবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ চলতি বছরের ৬ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে তার সঙ্গে জুবাইদা রহমানও দেশে আসেন। পরে ৫ জুন ডা. জুবাইদা লন্ডনে ফিরে যান। ডা. জুবাইদা রহমানের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তবে আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী হবেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপি সূত্র ধারণা দিচ্ছে, শিগগির তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে দলের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়,অর্থাৎ আগস্টের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।