মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসী যা জানালেন

কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসা এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা মোড় নিয়েছে অন্যদিকে। অভিযুক্ত ফজর আলীর সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ ছাড়া এলাকার সবাই উভয়ের (প্রবাসীর স্ত্রী ও ফজর আলী) পরকীয়ার বিষয়টি অবগত বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন। রোববার (২৯ জুন) দুপুরে চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন ও বাহেরচর পাঁচকিত্তা এলাকার বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাম গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত ফজর আলীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। প্রেমের সূত্র ধরে গোপনে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতেন ফজর আলী। বিষয়টি টের পান স্থানীয় বাসিন্দারা। আরও পড়ুনঃ হঠাৎ যেকারণে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ডক্টর ইউনুস গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পাশের বাড়িতে পূজার অনুষ্ঠান শুরু হয়।
ভুক্তভোগী ওই নারীর বাবা-মা পূজার অনুষ্ঠানে চলে গেলে ফজর আলীকে ডাকেন তিনি। ফজর আলী ওই বাড়ির দিকে রওনা করলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে হাতেনাতে ধরার জন্য ফাঁদ পাতেন।
এ সময় ফজর আলী ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগ সভাপতি সুমনসহ তার সঙ্গীরা তাদেরকে হাতেনাতে আটক করেন। প্রথমে ফজর আলীকে বেধড়ক পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে পরিকল্পিতভাবে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব স্থানীয় এক বাসিন্দা মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাইরাল ওই ভিডিওটি নিশ্চয়ই দেখেছেন। সেখানে লোকজন যদি তাকে (ভুক্তভোগী নারীকে) উদ্ধার করতেই আসতেন তবে তাকে ১০-১২ জন মিলে হেনস্তা করলেন কেন। তার নগ্ন শরীরের ভিডিও করছিলেন কেন।
সবচেয়ে বড় কথা ওই নারীকে কেউ কেউ মারধরও করছিলেন, গালিগালাজ করছিলেন, কিন্তু কেন? কারণ উভয়ের পরকীয়া ছিল। হাতেনাতে তাদেরকে ধরা হয়েছে। সেজন্য প্রথমে ফজর আলীকে মারধর করে বিছানার পাশে ফেলে রাখা হয়। পরে ওই নারীকে উত্তেজিত জনতা হেনস্তা করে। রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই এলাকার সবাই উভয়ের পরকীয়ার বিষয়টি অবগত।
ফাঁদ পেতে দুজনকে হাতেনাতে ধরেছে এলাকাবাসী। তবে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছে তারা। আমি এ ঘটনায় জড়িত সবার উপযুক্ত শাস্তি চাই। ফজর আলীরও বিচার দাবি করছি। আরও পড়ুনঃ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর সারজিসের ফেসবুক পোস্ট কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুরো বিষয়টি এখন তদন্তানাধীন।
ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, শেষ হলে বিস্তারিত জানাব। ফজর আলীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকের ছাড়পত্র পেলে তাকে আদালতে তোলা হবে।