ফোন না ধরার অভিযোগের বক্তব্য নিতে ফোন করলেও ধরেননি ঢাবি ভিসি

ফোন না ধরার অভিযোগের বক্তব্য নিতে ফোন করলেও ধরেননি ঢাবি ভিসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সাংবাদিকদের ফোন ধরেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের বক্তব্য নিতে ফোন করলেও ধরেননি ঢাবি ভিসি। ঢাবি উপাচার্য সাংবাদিকদের ফোন ধরেন না বলে অভিযোগ করে  দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আরিফ জাওয়াদ বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর নিউজের জন্য বক্তব্য জানতে একদিনও তাকে (ড. নিয়াজ আহমদ খান) ফোনে পাইনি।

একটা নিউজের জন্য কোনো সময় সাতবারও ফোন দিয়েছি কিন্তু ফোন রিসিভ তো করেই না বরং কোনদিন কল ব্যাক করেও নাই। স্বৈরাচারের সময়ের ভিসিরাও সাংবাদিকদের ফোন ধরতেন সেখানে ওনার এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত। আরিফ জাওয়াদ বলেন, ‘এখন এই মানসিকতা নিয়ে কল দেই, তিনি ফোন ধরবেন না।’ শুধু আরিফ জাওয়াদই নন, এরকম দশজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ক্যাম্পাস সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। সবার বক্তব্য একই। সবার অভিযোগ, নিউজের জন্য উপাচার্যের বক্তব্য প্রয়োজন হলে তিনি কারোরই ফোন ধরেন না।

এমনকি সরাসরি তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়না। দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার রুদ্র আসাদের ফোন ধরেছেন ৮ মাসে মাত্র একবার। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের নানা সংবাদের প্রয়োজনে ভিসি স্যারকে কল দেই। আগস্ট মাসের শেষ দিকে উনি ভিসি হওয়ার পর একাধিকবার কল দেয়ার পরও তাকে পেতাম না। যদিও আশা ছিল পূর্ববর্তী ভিসিদের মতো তিনি হবেন না যেহেতু তিনি অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ভিসি হন। স্যার কল না ধরায় নিউজ লিখতে বেগ পেতে হতো। নিউজের ভারসাম্যও নষ্ট হতো। গত ৮ মাসে মাত্র ১ বার ওনার সঙ্গে কলে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল।

 এখন তো স্যারকে কল দিলেও এটা ভেবেই কল দেই যে তিনি কল ধরবেন না। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গতবছরের আগষ্ট মাসে নিয়োগ পান উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দায়িত্ব পাওয়ায় তার কাছে শিক্ষার্থীদের আশা আকাঙ্ক্ষা অন্যদের থেকে অনেক বেশি। কিন্তু তার কাছ থেকে এরকম আচরণ কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মনে করছেন ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা।

 ঢাবি প্রতিনিধি হারুন ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সংক্রান্ত কোনো ঘটনার সত্যতা যাচাই, কর্তৃপক্ষের অবস্থান জানাসহ, বিতর্কিত বিষয় বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ভিসির ব্যাখ্যা বা প্রতিক্রিয়া জানতে মূলত ফোন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে নিয়োগ পেয়েছেন। যা অন্যান্য সময়ের থেকে বেশি প্রত্যাশার, এরপরও তিনি ফোন ধরেন না। সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ না করাটা দুঃখজনক। এমন আচরণ প্রশ্ন তোলে নেতৃত্বের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে।

 ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা জানান, উপাচার্যকে ফোনে না পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে ফোনে সচরাচর পাওয়া যায়। দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার রুদ্র আসাদ বলেন, ভিসি স্যারকে ফোনে না পেলেও বিদিশা ম্যামকে ফোনে সবসময় পাওয়া যায়। তিনি খুব ভালোভাবে রেসপন্স করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান কোনো সাড়া দেননি।