হাসিনার ‘মুখাবয়বে’ আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতার নিয়ে যা জানা গেল

হাসিনার ‘মুখাবয়বে’ আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতার নিয়ে যা জানা গেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা) চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য বানানো ফ্যাসিস্ট হাসিনার মুখাবয়ব ও শান্তির পায়রা দুটি প্রতিকৃতিতে একজন ব্যক্তিকে আগুন দিতে দেখা গেছে। 

শনিবার চারুকলা এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ এ তথ্য জানতে পারে।

পরে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে ঢাবি প্রশাসন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম রবিউল ইসলাম রাকিব।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি আগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এদিকে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুন দেওয়ার ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলেও জড়িতদের পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশ বলছে, অভিযুক্তের নাম-পরিচয় প্রকাশ করার পর এখন গ্রেফতার কঠিন হয়ে পড়েছে। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবেগের বশে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। এখন ওই যুবককে গ্রেফতার কঠিন হয়ে গেছে পুলিশের পক্ষে। কারণ ওই যুবক এখন চেষ্টা করবে আত্মগোপনে থাকতে। তবে অভিযুক্ত যুবক ও মদতদাতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রোববার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরুর আগেই ডিটেকশনের ক্ষেত্রে সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে যাব। সম্ভব যদি হয়, বাই দিস টাইম, দুর্বৃত্তদের অ্যারেস্ট করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।

তবে ডিএমপি কমিশনার এমন আশার কথা শোনালেও পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার পরও অভিযুক্তকে গ্রেফতারে কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেনি পুলিশ।

কীভাবে আগুন দেওয়া হয় চারুকলার মোটিফে?

ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুন দেওয়ার ঘটনার সিসি ক্যামেরার ভিডিও রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন।

তারা বলছেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওই যুবক থাকতেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারী হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাকে আর হলে দেখা যায়নি।

আরবি বিভাগের ওই ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফ আহমেদ বলেন, আমরা সবাই তাকে ভিডিও দেখে চিনতে পেরেছি। সে কয়েকদিন আগে বিজয় ৭১ হলের সামনে এসে ছাত্রলীগের স্লোগান দিয়ে গেছে। তার ফেসবুক কমেন্ট ও পোস্ট এখনো মারাত্মক লেভেলের আক্রমণাত্মক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদেরও মনে হয়েছে ওই ছেলে হয়ে থাকতে পারে। আমরা বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এখন তদন্ত চলছে।

বাংলা নববর্ষের আগের দিন রোববার রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে এসে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, খুব শিগগির গ্রেফতারের খবর আপনাদের দিতে পারব আশা করি।

ওই ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, শুধু এটুকু বলে রাখি, আমরা অত্যন্ত ক্লোজ। খুব নিকটে পৌঁছে গেছি ডিটেকশনের ক্ষেত্রে। আমরা আশা করছি (সোমবার) সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরুর আগেই ডিটেকশনের ক্ষেত্রে সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে যাব। সম্ভব যদি হয়, বাই দিস টাইম, দুর্বৃত্তদের অ্যারেস্ট করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।