বাংলাদেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে মানতে হবে যেসব শর্ত

বাংলাদেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে মানতে হবে যেসব শর্ত

অনেক আলোচনা ও সমালোচনার পর অবশেষে প্রস্তুত করা হয়েছে বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর খসড়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের তৈরি করা এই খসড়াটি এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে দেশের শাসনব্যবস্থা, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, সংসদ ও নির্বাচন পদ্ধতিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব আনা হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে কোনো ব্যক্তি দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না।

এছাড়া কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। এই সনদে সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশও করা হয়েছে। ‘জুলাই সনদ’ নামে পরিচিত এই খসড়াটিকে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। মোটাদাগে এর তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম অংশে সনদের পটভূমি, দ্বিতীয় অংশে ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব এবং তৃতীয় অংশে সনদ বাস্তবায়নের জন্য আট দফার অঙ্গীকারনামা তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন এই চূড়ান্ত খসড়াটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে হস্তান্তর করে। এতে রাষ্ট্রীয় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমনের মতো বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলোর বিষয়ে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 সনদের পটভূমিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের নীতিকে ধারণ করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের আকাঙ্ক্ষা দীর্ঘ ৫৩ বছরেও অর্জিত হয়নি। খসড়ায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধন, নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন, এবং নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছে। এছাড়াও, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসনকে দলীয়করণ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগও আনা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে সনদে উল্লেখ করা হয়।