মনোনয়ন পাচ্ছেন না বিএনপির যে সব নেতারা!

মনোনয়ন পাচ্ছেন না বিএনপির যে সব নেতারা!

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা হলো দলের ইমেজ ক্ষুণœ করেছেন এমন নেতাদের তালিকা করতে। তাদের আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই দলের টিকিট দেওয়া হবে না । বিএনপি সাধারণ মানুষের ভালোবাসার দল। শহীদ জিয়ার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বিএনপি। চাঁদাবজি, দখল এবং বিতর্কিত কর্মকা-কে বিএনপি প্রশ্রয় দেবে না। এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িতদের বিএনপি প্রমোট করবে না। শতাধিক ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল ॥ বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ক্লিন ইমেজের শতাধিক নেতাকে নির্বাচনি প্রস্তুতির জন্য গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে যদি কেউ বিতর্কিত কর্মকা-ে নিজেকে জড়ান তা হলে তাদের ক্ষেত্রেও কঠোর অবস্থানে যাবে দল। মানে তারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভিডিও কলে অংশ নিয়ে যার যার এলাকায় কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষ হলে পর্যায়ক্রমে ৩০০ প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। সবাইকে ভোটের কারচুপি, জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, ফল ছিনতাইসহ সব ধরনের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকমান্ড। একই সঙ্গে নিজেদের জনগণের কাছে আরও বেশি যাওয়ার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন। তাদের তারেক রহমান বলেছেন, জনগণই হচ্ছে বিএনপির শক্তি। সুতরাং জনগণের বিপদ আপদে কাছে থেকে তাদের সমর্থন আদায় করতে হবে। তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি দেওয়া নির্দেশনায় বলেছেন, সন্ত্রাসী-অপরাধীদের কোনো দল নেই। এদের কাউকেই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এরা যে দলেরই হোক তাদের ধরে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। পাশাপাশি দল ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের ইউনিট-কমিটির নেতাদের কঠোরতার সঙ্গে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

সবাইকে মনে রাখতে হবে, বিএনপি শতভাগ একটি গণতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিজমে বিশ্বাস করে না। এ ক্ষেত্রে দল ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের কমিটির নেতা-কর্মীদের কর্মকা-ের দায় সংশ্লিষ্ট কমিটির নেতাদের নিতে হবে। তরুণ নেতাদের প্রাধান্য ॥ নির্বাচনী সেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন জনকণ্ঠকে জানান, এবারের নির্বাচনে তারা অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের একটু বেশি প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। যারা বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন, এলাকায় পরিচ্ছন্ন অবস্থান রয়েছে, বিগত দিনে মামলা-হামলায় নির্যাতিত হয়েছেন, নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন, দলের প্রতি শতভাগ আনুগত্য ছিলেন তারা এবারের মনোনয়ন নির্বাচনে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন। ক্ষমতায় গেলেও বিতর্কিত কর্মকা- করলে দমন ॥ বিএনপি যদি ক্ষমতায় যেতে পারে সেক্ষেত্রে যারা দলের সুনাম ক্ষুণœ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে দলটি। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব কিংবা দেশ ও জনগণের জন্য ক্ষতিকারক এমন কোনো কাজ করলে যত বড় নেতা বা প্রভাবশালীই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি। প্রয়োজনে তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, বিএনপি চায় এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে জনগণের শাসন থাকবে। কেউ কারও ওপর জুলুম করবে না, অন্যায় করবে না। বিএনপি যদি ক্ষমতায় যেতে পারে এবং দলের কোনো নেতা বিতর্কিত কাজ করেন তা হলে তাদেরও কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বিতর্কিতদের চান না জেলা নেতারাও ॥

 পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা তৃণমূলে যখনই কোনো অনিয়ম, বিতর্কিত কর্মকা-ের অভিযোগ পাই তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। ইতোমধ্যে অসংখ্য নেতাকর্মীকে শোকজ এবং বহিষ্কার করেছি। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা চাই সারা বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন এবং ভালো ইমেজের প্রার্থীরা মনোনয়ন পাক। ক্লিন ইমেজের প্রার্থী দিলে আশা করি বিএনপি বিপুল ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতায় যাবে। ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন সৎ এবং ক্লিন ইমেজের রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। আমরা তার আদর্শকে ধারণ করে রাজনীতি করি। আমরা আশা করি ক্লিন ইমেজের নেতারাই আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এটি তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীর প্রাণের দাবি।