বরগুনা আমতলীতে জাল ওয়ারিশ সনদে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন কারাগারে

বরগুনা আমতলীতে জাল ওয়ারিশ সনদে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন কারাগারে

বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধাকে জাল ওয়ারিশ সনদ প্রদান করার অভিযোগে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একই মামলায় এর আগে আরও দুই আসামিকেও জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

১৫ জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুরে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে, আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুল আলম তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ১৩ জুলাই (রবিবার) মামলার নির্ধারিত হাজিরার দিনে মহিলা সদস্য সাহিদা বেগম ও ফারুক প্যাদা আদালতে হাজির হলে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই দিন মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৪ মে, আমতলী উপজেলার দক্ষিণ আমতলী গ্রামের মৃত মৌজে আলী প্যাদার ছেলে মো. শাহিন প্যাদা বাদী হয়ে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসাঃ সাহিদা বেগম (১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড) এবং বাদীর আপন ভাই মো. ফারুক প্যাদাকে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, মৃত মৌজে আলী প্যাদার মৃত্যুর পর তার পাঁচ ছেলে, চার কন্যা ও দুই স্ত্রীসহ মোট ১১ জন বৈধ ওয়ারিশ ছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিনটি পৃথক ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করেন, যেখানে বাদী মো. শাহিন প্যাদার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই সনদগুলো ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি (স্মারক নং ৮১১৫), ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর (স্মারক নং ৪৩৭), এবং ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট (স্মারক নং ৩৭) তারিখে প্রদান করা হয়।

তবে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা নতুন করে দুটি ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করেন (স্মারক নং ২১৩ ও ২০৫), যেখানে বাদী শাহিন প্যাদার নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়। বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, এই জাল সনদের মাধ্যমে তার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তাকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত করা হয়েছে এবং আসামি ফারুক প্যাদা ওই সনদ ব্যবহার করে সেটেলমেন্ট অফিসে জমা দিয়েছেন।

“আমার আপন ভাই জালিয়াতির মাধ্যমে আমার নাম বাদ দিয়ে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে সেটেলমেন্ট অফিসে জমা দিয়েছে। এতে আমি আমার ন্যায্য পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই আমি আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”

এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ধরনের দুর্নীতির ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।