ফেনীতে তাঁতীদল নেতার বিরুদ্ধে বৃদ্ধা ও প্রবাসীর জায়গা দখলের অভিযোগ

ফেনী প্রতিনিধি : ফেনী পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বাথানিয়া মৌজায় এক বৃদ্ধা মহিলা ও দুই প্রবাসীর জায়গা এবং দোকানঘর দখলে নিয়েছে ফেনী পৌর জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের যুগ্ম আহবায়ক ইমাম হোসেন মানিক ওরফে বোমা মানিক ও তার ভাই রবিউল হক। থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। সালিশী বেঠকে জবরদখল প্রমানিত হওয়ায় তাকে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী থানার এএসআই শাহিনুর রহমান। নির্দেশনা অমান্য আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
জানা গেছে, বাথানিয়া গ্রামের হাজী আফজালুর রহমান থেকে দলিল মুলে মালিক থাকিয়া আবদুল আলীম থেকে খায়রুন নেছা ৯ শতাংশ ভুমির আন্দরে দলিল মুলে ৪.৫০শতাংশ ও সৌরভ হোসেন থেকে আবুল কাসেম ও বাচ্ছু মিয়া ৪.৫০ শতাংশ ভুমি কবলা মুলে মালিক থাকিয়া দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে ভোগ দখল করে আসছেন।
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর অস্ত্র ও পেশীশক্তির জোরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বোমা মানিক খালি জায়গায় টিনসেটের ঘর নির্মাণ করে ও সামনের অংশে থাকা দোকানঘর দখলে নেয়। মানিক পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামের রেজাউল হকের বাড়ির মাবুল হকের ছেলে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিববার থানায় অভিযোগ দিলে, পুলিশ ঘটনার স্থলে গিয়ে কাজ করতে নিষেধ করেন। পুলিশের বাধা তোয়াক্কা করে ঘর নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে বোমা মানিক।
বৃদ্ধা খায়রুন নেছার ছেলে নাছির উদ্দীন জানান, বোমা মানিক যখন অবৈধভাবে ঘর নির্মান করছে তখন বাধা দিতে গেলে সে ও তার ছোট ভাই রবি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। দ্বিতীয় বার এই জায়গায় আসলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। প্রবাসী বাচ্ছু মিয়া জানান, সারা জীবন বিদেশে থেকে কষ্টে অর্জিত টাকা দিয়ে আমরা দুই ভাই এই জায়গাটি কিনেছি, বর্তমানে এই দুই সন্ত্রসী জায়গাটা দখলে নিয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলে হত্যা হুমকি দেয়। এখন আমরা অনিরাপদ।
এব্যাপারে তাঁতীদল নেতা মানিক জানান, ওরা জায়গ মালিক ঠিক আছে। আমি ভাড়া নিতে রাজি। তারাও একপর্যায়ে ভাড়া দিতে রাজি হয়েছিল। কিছু কাজ করার পর হঠাৎ তারা ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার এএসআই শাহিনুর রহমান জানান, বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়ার জন্য মানিক ও বাদী পক্ষদের নিয়ে থানায় একটি বৈঠক বসেছি, সেখানে উভয় পক্ষের মানিত শালিশদারগন ছিলেন। বৈঠকে মানিক দুই পক্ষের জায়গার মালিকানা স্বীকার করেছে। সে তাদের দুই পক্ষকে জায়গার ভাড়া দিতে চায় কিন্তু বাদী পক্ষ তাকে ভাড়া দিতে রাজি নয়। যেহেতু মানিক জোর করে ঘর নির্মাণ করেছে তাই উপস্থিত হাউজে মানিককে সেখান থেকে ঘর সরিয়ে নিতে বলা হয়, কিন্তু সে এখানো সরিয়ে নেয়নি। তিনি জানান, বর্তমানে এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান আছে।
উল্লেখ্য, বোমা মানিক এলাকার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসি, মাদক কারবারি, ও অস্ত্রবাজ। ইতিপূর্বে সে মাদক ও অস্ত্র মামলায় একাধিক বার জেল খেটেছে। ৫আগস্টের পর সে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দখল, চাঁদাবাজি, ও মাদক ব্যবসার সাথে সে এবং তার ভাই সরাসরি জড়িত বলে জানায় এলাকাবাসী।