ইরান থেকে আসা শিশুকে মাটিতে আছাড় মারা সেই ইসরাইলপন্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

ইরান থেকে আসা শিশুকে মাটিতে আছাড় মারা সেই ইসরাইলপন্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

মস্কোর শেরেমেতিয়েভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৮ মাস বয়সী একটি আফগান শিশুর ওপর বিনা প্ররোচনায় সহিংস হামলার ঘটনায় বেলারুশের একজন পর্যটকের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। আক্রমণকারী ব্যক্তি ইসরায়েলপন্থী বলে জানা গেছে।

 গর্ভবতী মায়ের সাথে ভ্রমণকারী শিশুটি মাথার খুলিতে এবং মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। সে বর্তমানে কোমায় রয়েছে। অভিযুক্ত ৩১ বছর বয়সী ভ্লাদিমির ভিটকভকে ঘটনার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভিটকভের রক্তে গাঁজা এবং শরীরে অতিরিক্ত মাদক পাওয়া গেছে। ফ্লাইট আসার পর শিশুটি তার মা থেকে আলাদা হওয়ার সময় এই আক্রমণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় তার মা পুশচেয়ার সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন।

হামলার ভিডিওটি তখন থেকেই ভাইরাল হয়ে যায়। আরও পড়ুনঃ ইরানের পক্ষে তুরস্কের জোরালো অবস্থান, যা বললেন এরদোয়ান সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ৩১ বছর বয়সী ভ্লাদিমির ভিটকভ ১৮ মাস বয়সী ছেলে শিশুটিকে বিমানবন্দরের মেঝেতে মাথার উপরে তুলে ফেলে দিচ্ছে। সে ইরানে ইসরায়েলি হামলা থেকে পালিয়ে যেতে পরিবারের সাথে বিমানবন্দর এসেছে।

 ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অন্য একজন ব্যক্তি শিশুটিকে তুলে নেওয়ার সময় পাশের লোকজন ছুটে আসছে। আক্রমণকারীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে, তারপর উঠে পালিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। পরে পৃথক ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ভিটকভকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিশু ইয়াজদান এই ঘটনায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মাথার খুলি ও মেরুদণ্ডের ফাটল এবং হেমাটোমাস সহ গুরুতর ক্র্যানিওসেরেব্রাল আঘাত ধরা পড়ে।

 ইয়াজদানের মা হাজিজাদা সাহার গর্ভবতী বলে জানা গেছে। সন্তান যখন আক্রমণের শিকার হন, তখন তার থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে ছিলেন তিনি। আরও পড়ুনঃ বিয়ের ওয়েবসাইটে ভুয়া পরিচয়ে নিবন্ধন, ১৫ পাত্রীকে ধর্ষণ মস্কোর রোশাল চিলড্রেন’স সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক ডাঃ তাতায়ানা শাপোভালেনকোর মতে, ইয়াজদান এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছে এবং তার মস্তিষ্কের ক্ষতির কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তার মা বলেছেন, শিশুটির নিউরোসার্জারির প্রয়োজন হবে না।

 মস্কো অঞ্চলের শিশু ন্যায়পাল কেসনিয়া মিশোনোভা শিশুটির বেঁচে থাকাকে “একটি অলৌকিক ঘটনা” বলে বর্ণনা করেছেন।যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরান থেকে পালিয়ে পরিবারটি আফগানিস্তানে পৌঁছে। সেখানে তারা আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। রূশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আক্রমণের সময় ভিটকভ মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্ত ছিল। ম্যাশ নিউজ আউটলেট জানায়, কায়রোতে তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে এবং মাদক সংগ্রহের পর সে তিন বোতল হুইস্কি খেয়েছিল বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ জানা গেল যে কারণে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা ছাড়লেন খামেনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময়, ভিটকভ স্বীকার করেছে, সে “একটি শিশুকে হত্যার চেষ্টা করেছিল । তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, সে বলেছিল: “আমার উদ্দেশ্য? আমি জানি না – আমি মাদকাসক্ত ছিলাম।” প্রাথমিক প্রতিবেদনে শিশুটি ইরানি বলে মনে করা হলেও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মস্কোতে ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালিকে জানিয়েছে, ইয়াজদান আসলে আফগানিস্তানের বাসিন্দা।

এমন অসমর্থিত প্রতিবেদনও পাওয়া গেছে যে, আক্রমণকারী ইসরায়েলপন্থী ছিল, যদিও কোনও সরকারী বিবৃতি এটি নিশ্চিত করেনি। সূত্রঃ আল জাজিরা, দ্য নিউজ আরব।