সেহরি খাওয়ার পর সহবাস কি জায়েজ?

রমজান মাসে রোজা পালন ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। রোজার জন্য রাতে সেহরি খাওয়া সুন্নত এবং এটি শারীরিকভাবে উপকারীও বটে। মুসলমানরা সাধারণত ফজরের ওয়াক্তের আগে সেহরি গ্রহণ করেন এবং রোজার নিয়ত করেন, যা রোজার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। অনেকের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, একবার রোজার নিয়ত করলে এরপর স্বামী-স্ত্রীর মিলন করা যাবে না। তবে কোরআন ও হাদিসের আলোকে দেখা যায়, সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর জন্য সহবাস বৈধ।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে স্পষ্টভাবে বলেছেন, “রমজানের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন (সহবাস) হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ, আর তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন তোমরা নিজেদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছিলে, তাই তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে পৃথক হয়ে যায়। তারপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর।” (সূরা বাকারা: ১৮৭) এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, রমজানের রাতে, অর্থাৎ সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত, স্বামী-স্ত্রীর সহবাস বৈধ।
সাহরি খাওয়ার পরও যদি সুবহে সাদিক হওয়ার সময় বাকি থাকে, তাহলে সে সময়ের মধ্যে সহবাস করা ইসলামে অনুমোদিত। সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজাদারের জন্য সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং এর জন্য কাফফারা (শাস্তিমূলক প্রতিকার) আদায় করতে হবে। কাফফারা হিসেবে একজন মুসলিমকে একটানা ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ৬০ জন দরিদ্র মানুষকে খাওয়াতে হবে। যারা ইতিকাফে (রমজানের শেষ দশকে মসজিদে নিরবচ্ছিন্ন ইবাদতে লিপ্ত থাকা) রয়েছেন, তাদের জন্য দিন বা রাত—কোনো সময়েই সহবাস বৈধ নয়।