সাহরি না খেলে কি গুনাহ হবে?

সাহরি না খেলে কি গুনাহ হবে?

পবিত্র রমজান মাসে সাহরি খাওয়ার ব্যাপারে মসজিদে যে হাদিসগুলো পড়া হয়— সেখানে শুনি যে, সাহরিতে বরকত রয়েছে। কিন্তু দেরিতে রাতের খাবার খাওয়ার কারণে অনেক সময় সাহরি খাওয়ার রুচি থাকে না। ফলে এই বরকতময় খাবার খাওয়া হয় না। কিন্তু সাহরি না খাওয়ার কারণে কি আমাদের কোনো ধরনের গুনাহ হবে? একটু জানাবেন। এই প্রশ্নের উত্তর হলো- সাহরি অত্যন্ত বরকতময় খাবার। আর নিঃসন্দেহে সাহরি খাওয়া সুন্নত ও ইবাদত। কেননা আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহরি খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সাহরিতে বরকত রয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯২৩) রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টান আর মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৪৩; তিরমিজি, হাদিস : ৬৪২) রাসুল (সা.) নিজে সাহরি খেতেন।

সুতরাং সাহরি খাওয়া সুন্নত; ওয়াজিব নয়। তাই কোনো ব্যক্তি যদি সাহরি খায় না; তার গুনাহ হবে না। তবে সে সুন্নত ছেড়ে দিল। তাই সামান্য হলেও সাহরি খাওয়া উচিত। বেশি পরিমাণে খাওয়া আবশ্যকীয় নয়। শেষ রাতে যা আছে সেটা দিয়েই খেয়ে নিতে পারেন। এমনকি কয়েকটি খেজুর হলেও কিংবা যেকোনো খাবার সামান্য হলেও। আর যদি কিছু না থাকে কিংবা খাবারের রুচি না হয়— তাহলে সামান্যটুকু দুধ কিংবা কয়েক ঢোক পানি পান করতে পারেন। তবুও সাহরি খাওয়া ছেড়ে দেবেন না; যেহেতু সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত ও প্রভূত কল্যাণ রয়েছে। সাহরি খাওয়া রোযাদারের জন্য দিনের বেলায় তার কাজকর্ম সম্পাদনে সহায়ক। তাই একেবারে না খাওয়ার চেয়ে সামান্য হলেও সাহরি খেয়ে নেওয়া উচিত। ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সাহরিতে বরকত রয়েছে’— এভাবেই নবী (সা.) বলেছেন। এই বরকত ছুটে যাওয়া উচিত নয়।

বরং একজন মুসলিমের উচিত এই বরকত লাভে আগ্রহী হওয়া; এমনকি সামান্য কিছু খাবার দিয়ে হলেও কিংবা কয়েকটি খেজুর দিয়ে হলেও কিংবা কিছু দুধ দিয়ে হলেও। এই সাহরি খাওয়া দিনের বেলায় তার দুনিয়াবি ও দ্বীনি কাজকর্মের জন্য সহায়ক। (শায়খ আবদুল আজিজ বিন বিন রহ.; ফাতাওয়া নুরুন আলাদ্ দারব : ৩/১২২২) আল্লাহ তাআলা আমাদের সাহরি খেয়ে এবং রমজানের পবিত্রতার রক্ষা করে রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।