আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনা হবে কি না, প্রশ্ন রুমিন ফারহানার

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনা হবে কি না সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। রুমিন ফারহানা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা পেয়েছি নির্বাচন কবে হচ্ছে। এটি একটি ভালো খবর। তবে আমরা আরো বেশি আনন্দিত হতাম এবং আশ্বস্ত হতাম, দেশের মানুষও আশ্বস্ত হতো রোডম্যাপটি কি হতে পারে, কবে নির্বাচন নিয়ে তারা ভাবছেন।
যদি তারা একটু পরিষ্কার করতেন, তাহলে আমার মনে হয় দেশের মানুষ আরো অনেক বেশি আশ্বস্ত হতো। ’ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশে ৫ আগস্টের পর থেকে নানা মহল বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। তারা এই সরকারকে একদিনের জন্য শান্তিতে দেশ পরিচালনা করার সুযোগ দিতে রাজি না। সেই জায়গা থেকে আমরা বিশ্বাস করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে একটি নির্বাচিত সরকার যত সহজে এ ধরনের অস্থিতিশীলতা বা সমস্যা মোকাবিলা করতে পারে, আর কোনো সরকারের পক্ষে এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সুতরাং দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে, একটি নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব দিলে এটা সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে। ’ বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমাদের সামনে এখন অনেকগুলো প্রশ্ন। প্রথমত- আগামী নির্বাচন কবে হচ্ছে ? দ্বিতীয়ত- সেই নির্বাচনে কি সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে? আমরা আসলে সত্যটাকে সত্য বলেই সামনে আগাতে হবে।’
আওয়ামী লীগকে কি নির্বাচনে আনা হবে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের (অংশগ্রহণকারী) একটা বড় অংশ কিন্তু চাইছে না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তারা চাইছে সব বিচার শেষ করে নির্বাচন হবে। অনেক দিক থেকে অনেক প্রশ্ন আছে। সুতরাং আমরা শুধু আজকে আর কালকে ভাবলে হবে না। আজ থেকে ১০/২০ কিংবা ৫০ বছর পর কি হবে সে কথাও ভাবতে হবে। বলা হবে যে, ২০১৪-১৮ নির্বাচনে যা হয়েছে, ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনেও তা-ই হয়েছে। সুতরাং এই সব কিছুর চিন্তা মাথায় রেখেই আমাদের নির্বাচনের পথটা পাড়ি দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনের মাঠে আসে আসে তাহলে নির্বাচনের মাঠের পরিবেশ কী হবে? একটা কি মারামারি রক্তপাতের দিকে বাংলাদেশ যাবে? আমি মনে এই প্রশ্নগুলো সবার মনে আছে, কেউ মুখে বলছে না। প্রশ্নগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হওয়া উচিত এবং এই প্রশ্নগুলোর সুরাহা বা সমাধান এই আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই হওয়া উচিত।
’ রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমরা দেখেছি একটা অর্থনৈতিক স্থবিরতা। আমরা লক্ষ্য করছি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কিন্তু সেভাবে হচ্ছে না। কারণ বিনিয়োগের জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশ প্রয়োজন। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করবে তখনই, যখন দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করে। তাই সেই দিক থেকে চিন্তা করলে নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং আমরা আশা করব, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদেরকে একটি রোডম্যাপ দেবে, কি কি সংস্কার তারা কত দিনের মধ্যে সম্পন্ন করে মানুষের ক্ষমতা মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা।’ মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম মমিনুল হকসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় জেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।