কালচারাল ফ্যাসিস্টদের ‘শোকের’ আড়ালে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র!

কালচারাল ফ্যাসিস্টদের ‘শোকের’ আড়ালে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র!

গত ১৫ আগস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শোবিজ তারকারা শেখ মুজিবের প্রতি যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, তা নিছকই শ্রদ্ধার মধ্যে আটকে ছিল না, বরং এর আড়ালে ঘটে গেছে ভয়াবহ এক ষড়যন্ত্র। কেউ কেউ সত্যিকারার্থে সেদিন মুজিবকে শ্রদ্ধা জানালেও বড় অংশই জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পক্ষে বয়ান তৈরির জন্য সমন্বিত প্রচারণায় অংশ নেয়।

 গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে এমন তথ্য দিয়েছেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। রোববার (১৭ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সায়ের লিখেছেন, ‘আপনি যদি ১৫ আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের সম্মান জানানোটা খালি চোখে দেখেন তাহলে মনে হবে এটি হয়তো তার ১৯৭১ সালে দেশকে স্বাধীন করার সংগ্রামে অবদানের জন্য। কিন্তু অন্তরালে ঘটে গেছে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। পুরোটাই ছিল একটা ওয়েল কো-অর্ডিনেটেড ক্যাম্পেইন। হ্যাঁ, কেউ কেউ সত্যিকার অর্থেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের লং টার্ম অ্যালাই (সহযোগী), কেউ অর্থের বিনিময়ে, কেউ বিজ্ঞাপন জগতের আওয়ামী মাফিয়ার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে। অন্যদের মধ্যে যারা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারা হলেন গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী—

কিছু শিক্ষক, কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন পেশার সুবিধাবাদী। তারা অতিরিক্ত উৎসাহ দেখিয়েছেন। কারণ তারা চান, আওয়ামী লীগ ফিরলে তাদের দুর্নীতি, অবৈধ প্রভাব ও নৈতিক ছাড়পত্র অব্যাহত থাকবে। ’ ‘শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তারা একটা ন্যারেটিভ দাঁড় করিয়েছে। সেটি ছিল আইসোলেটেডভাবে শেখ মুজিবকে গ্লোরিফাই করা। তার মানে হলো— গত ষোল বছর আওয়ামী লীগ শাসনামলে শেখ মুজিবের নাম নিয়ে যে অত্যাচার চালানো হয়েছে তা এড়িয়ে যাওয়া। আওয়ামী লীগ তাদের সব অপকর্ম শেখ মুজিবের ছবি ও নামের বর্মে ঢেকে রেখেছিল, জুলাই বিপ্লবের কোনো উল্লেখ নেই। কিংবা ‘আমরা শেখ মুজিবকে ভালোবাসলেও আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরের হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন করি না’ এমন কোনো ডিসক্লেইমার নেই। যদিও প্রত্যেকটি পোস্টে শেখ মুজিবের একাত্তরের অবদানকে গ্লোরিফাই করা হয়েছে, কিন্তু সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে মুজিবের ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের ভয়ানক দুঃশাসন। ’

 সায়ের আরও লিখেছেন, ‘তার (মুজিব) শাসনকাল মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে গণতন্ত্র নয়, বরং স্বৈরতন্ত্রের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। রক্ষীবাহিনী গঠন ছিল এই শাসনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক, যারা অপহরণ, গুম, নির্যাতন ও হত্যার মাধ্যমে গোটা দেশকে আতঙ্কে ভরিয়ে তোলে। এই রক্ষী বাহিনী দ্বারা শেখ মুজিব প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে প্রত্যক্ষভাবে খুন করিয়েছিলেন। ভিকটিমদের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। সেই সময় রাজনৈতিক বিরোধী, ভিন্নমতাবলম্বী এমনকি সাধারণ নাগরিকদেরও নৃশংসভাবে দমন করা হয়েছিল। এরই মধ্যে আসে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ, যা মুজিব সরকারের চরম অযোগ্যতা ও অমানবিক উদাসীনতার প্রতিচ্ছবি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রিসার্চারদের মতে, ১৫ লাখ মানুষ সেসময় মারা যান। এত মানুষ মারা গেলেও মুজিব সরকার তখন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা, বিরোধীদের দমন করা এবং লুটপাটে ব্যস্ত ছিল। দুর্নীতি, অদক্ষতা ও দমনপীড়নই মুজিব আমলের মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। জনগণের কাছে যে সোনার বাংলার স্বপ্ন তিনি দেখিয়েছিলেন, তা রূপ নেয় ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর দুঃস্বপ্নে। ’ ‘১৯৭৫ সালের জনরোষ হঠাৎ তৈরি হয়নি—এটি ছিল মুজিবের ব্যর্থতা, তার রক্ষীবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ এবং দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর কারণে জমা হওয়া ক্ষোভের বিস্ফোরণ।

অবাক করা বিষয়, শোক প্রকাশ করার সময় এসব বিষয়ের কোনো ন্যূনতম উল্লেখও ছিল না। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারীদের অধিকাংশই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়েছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই হত্যাযজ্ঞকে নিন্দা জানাই, কোনোভাবেই এ ধরনের জঘন্য হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া সম্ভব না। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, রক্ষীবাহিনীর দমননীতি, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে সরকারের ব্যর্থতা এবং মুজিবের একদলীয় স্বৈরশাসন সেই মুক্তিযোদ্ধাদের অসন্তুষ্ট করেছিল। প্রধান হত্যাকারীদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ ফারুক রহমান, খন্দকার আবদুর রশীদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী। তাদের অধিকাংশই মুক্তিযোদ্ধা এবং কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য খেতাব পান। তাদের দাবি, জাতিকে রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ, যদিও ইতিহাসে এই ঘটনা দেশপ্রেম নাকি ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ—তা নিয়ে বিতর্ক আজও চলমান। ’ চক্রান্তের তথ্য তুলে ধরে সায়ের লিখেছেন, এবার আসা যাক কীভাবে আওয়ামী লীগ এই সাকসেসফুল ক্যাম্পেইন করলো। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক তথ্য মতে, ১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ কয়েকজন নেতা কয়েকজন প্রভাবশালী ইনফ্লুয়েন্সারের সঙ্গে বৈঠক করেন, যাদের মধ্যে জুলাই আন্দোলনে ইনফ্লুয়েন্সারদের আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্য ভয়ভীতি দেখানো এক ইউটিউবার অন্যতম। এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাসিনার ঘনিষ্ঠ, সাংবাদিক মহলে এক পরিচিত মুখ পুরো প্রচারণার নকশা তৈরি ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেন। তার আবার বিনোদন জগতে ব্যাপক প্রভাব।

এদের মূল কৌশল ছিল—যাদের প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগপন্থি ভাবা যায় না, এমন সেলিব্রেটিদের দিয়ে পোস্ট করানো, যাতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয় এবং অন্য শিল্পী-সেলিব্রেটিরাও একই ধারায় পোস্ট দিতে রাজি করানো যায়। ’ ‘১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরেই আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ তারিন, তমালিকা, সাজু খাদেম, অরুণা বিশ্বাস ও শামীমা তুষ্টির মতো শিল্পীরা পোস্ট দিয়ে প্রাথমিক তরঙ্গ তৈরি করেন। এর পর বাংলা সিনেমার এক শীর্ষ নায়কের পোস্টকে ‘সেন্ট্রাল ভ্যালিডেশন’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, বরং সেই নায়ককে নানাভাবে ইনফ্লুয়েন্স করে এমন পোস্টে বাধ্য করা হয়। এই নায়কও ওই নেতার সাথে ঘনিষ্ঠ এবং দুজনই এখন আমেরিকায় রয়েছেন। এই গোটা প্রচারণায় সেই ইউটিউবার মাঠ পর্যায়ের নেটওয়ার্ক সক্রিয় করেন, আর তিনি কৌশলগত দিক নির্দেশনা দেন। পুরো উদ্যোগ ছিল পরিকল্পিত মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিস্তারের একটি অপারেশন। ’ পতিত আওয়ামী লীগের নতুন মিশনের কথা তুলে ধরে সায়ের লিখেছেন, আওয়ামী লীগের এখনকার মিশন হলো নানাভাবে এসব সেলিব্রেটিদের গ্লোরিফাই করা। তাদের অপারেশনের শুরুটা হয়েছিল যাহের আলভী নামে এফ গ্রেডের এক ইউটিউবে প্রচারিত যৌন সুড়সুড়িমূলক নাটকের নায়ককে দিয়ে। তিনি ১৫ আগস্টের কয়েকদিন আগে পোস্ট করে জানান যে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কেউ তার লিস্টে থাকলে তারা যেন তাকে আনফ্রেন্ড করে দেয়। তিনি আবার ১৫ আগস্টও শোক জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন। এরপরই গতকাল একটি জাতীয় দৈনিক তাকে নিয়ে বিরাট ফিচার প্রকাশ করে। এই এফ গ্রেডের নায়ককে পত্রিকাটির গ্লোরিফাই করার কোনো যুক্তি নেই। এটি ছিল তার পুরস্কার। পত্রিকাটির বিনোদন বিটের এক সাংবাদিক সেই হাসিনা ঘনিষ্ঠ নেতার পরিচিত। এই কানেকশনের সূত্রেই পত্রিকাটি যাহের আলভীকে ফিচার করে। এই সাংবাদিক আবার সেই শীর্ষ নায়কের ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন এবং অলিখিত বেতনভুক্ত পিআর ম্যানেজার। সাংবাদিকের স্ত্রী একজন গায়িকা। তিনিও শোক জানিয়ে পোস্ট দেন। আজ দেখলাম আরেকটি পত্রিকা তাকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে। এখন থেকে দেখবেন এদের গ্লোরিফিকেশন চলছেই। এবং এর প্রত্যেকটিই ওয়েল কো-অর্ডিনেটেড। ‘এছাড়াও, বিজ্ঞাপন জগতের মাফিয়া হিসেবে পরিচিত একজনের নাম এসেছে। তিনি ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। সরকারের উচিত এসব গভীরভাবে তদন্ত করা।

কিন্তু অবশ্যই কাউকে বিনা দোষে হ্যারাস যেন না করা হয়। একটা বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত হওয়া দরকার। এটা বের করা দরকার এটি কি জুলাই গণহত্যাকারী দলকে পুনর্বাসিত করার প্রাথমিক পদক্ষেপের ষড়যন্ত্র কি-না? মুজিবের পর তাদের পরবর্তী ন্যারেটিভ হচ্ছে, ধীরে ধীরে সরাসরি আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের দিয়ে পোস্ট করানো। এরই মধ্যে দেখবেন যে ইমতু রাতিশ নামে এক সি গ্রেড সেলিব্রেটি আওয়ামী লীগকে মহিমান্বিত করে একটা পোস্ট দেওয়ার স্পর্ধা দেখিয়েছে। যেহেতু এখন আয়নাঘর নেই কিংবা ইউনূস সরকার সরাসরি কোনো বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় তাই এই সাহস তারা দেখাচ্ছে। ’ এই সাংবাদিক লেখেন, ‘প্রত্যেকটা শোক জানানোর পোস্টে কিংবা পতিত গণহত্যাকারীদের পক্ষে কোনো ন্যারেটিভে আপনি দেখবেন সাথে সাথে কয়েক হাজার কমেন্ট, লাইক এবং শেয়ার হয়ে যাচ্ছে। এসব লাইক, কমেন্ট ও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিলিটেট করা স্পটলাইটের লোভেও কেউ কেউ হিরো সাজতে পোস্ট দিচ্ছে। আর এসব লাইক কমেন্টকারীদের অধিকাংশই পলাতক। এদের কাজই হচ্ছে ফেসবুকে শোরগোল তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। এমনও দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০-এর বেশি পোস্ট শেয়ার করেছে। ’ ‘‘এরা এখন সাইকোলজিকাল ওয়ারফেয়ারে নেমেছে। তারা চাইনিজ দার্শনিক সান-জুর মূল ধারণা অনুযায়ী কাজ করছে। যেটি হলো যুদ্ধ কেবল শারীরিক সংঘর্ষ নয়; মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করা এবং কৌশলগত পরিকল্পনা অপরিহার্য। তাই এই ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা, ভুল তথ্য এবং মানসিক চাপ ও ভয় তৈরি এখন আওয়ামী লীগের প্রধান অস্ত্র। অন্তর্বর্তী সরকারের অসংখ্য সমালোচনা ও ভুল থাকা সত্ত্বেও—সব সূচকে দেশ আওয়ামী লীগের চেয়ে ১০ গুণ ভালো থাকার পরও মানুষের মনস্তত্ত্বে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে—‘আগেই ভালো ছিলাম’ কিংবা ’আওয়ামী লীগই ভালো ছিল’ শব্দমালা। ’’ ‘‘অন্যদিকে দেখবেন এনসিপি কিংবা জামায়াতের সমর্থকদের একমাত্র একটি কাজ হলো বিএনপির সমালোচনা করা।

 আওয়ামী প্রোপাগান্ডা যেমন—বিএনপির নেতৃত্বকে ১০ পার্সেন্ট, বা খাম্বা; এ জাতীয় নোংরা ও পার্শ্ববর্তী দেশের অ্যাম্ব্যাসি দ্বারা তৈরি এক সময়ের ন্যারেটিভ এখন এসব রাজনৈতিক দলের দ্বারা সংঘবদ্ধভাবে সিডিং প্রক্রিয়ায় প্রচার হচ্ছে। ঠিক একইভাবে ছাত্রদল আবার ছাত্রলীগের ন্যারেটিভে জামায়াত-শিবিরকে অ্যাটাক করছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, এরা কেউই তাদের সামর্থ্যের ১০ পার্সেন্টও আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের প্রচারে ব্যয় করছে না। অন্যদিকে হাসিনার পতনের পর তথাকথিত ‘মাস্টারমাইন্ডরা’ শুধু মুখে মুখে আওড়াচ্ছে— ‘মুজিববাদের কবর, মুজিববাদের কবর!’— যা মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি করছে।’’ ‘এই সব বিভেদ গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, স্বৈরতন্ত্র, ভোট চুরি এবং রাজনৈতিক দমনপীড়নকে ঢেকে দিচ্ছে। তিনটি জালিয়াতিপূর্ণ নির্বাচন কিংবা ভোট চুরির বিষয় এখন আর গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিরোধীদলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা হাসিনা যে নির্মম নিপীড়ন চালিয়েছে এবং জুলাইয়ে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তা এখন আর এজেন্ডা না।’ সাংবাদিক সায়ের বলেন, ‘জুলাইয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, আর আপামর জনসাধারণ আপনাদের স্টেক এখন হাই। আপনাদেরই এসব প্রোপাগান্ডাকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ এখন মাঠে নেই। হয়তো ফিরতেও অনেক সময় লাগবে।

 কিন্তু ক্ষমা চাওয়া এবং তাদের বিচারের আগে যদি আওয়ামী লীগ কোনোভাবে ফিরে তাহলে বাংলাদেশ নামক দেশটি সার্বভৌমত্ব হারাবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কোনো দিন উঠে দাঁড়াতে পারবে না। সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করে দেশে নতুন রক্ষীবাহিনী আবার হত্যাযজ্ঞ চালাবে। তাই দেশপ্রেমিক জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সর্বদা সচেষ্ট থাকার শানিত শপথ নিতে হবে। রুখে দিতে হবে জুলাই ম্যাসাকার চালানো কসাইদের।’