একে-অপরকে ‘আ.লীগ ঘনিষ্ঠ’ প্রমাণে ব্যস্ত দুই ভাই

একে-অপরকে ‘আ.লীগ ঘনিষ্ঠ’ প্রমাণে ব্যস্ত দুই ভাই

সংবাদ সম্মেলন করেন দুই ভাই। ছবি : কালবেলা রাজশাহীতে বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন দুই ভাই। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে তারা একে-অপরকে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে দোষারোপ করেছেন।

 কেউ ছাত্রলীগের সঙ্গে ছবি তুলেছেন, কেউ তুলে ধরেছেন আওয়ামী লীগের প্রত্যয়নপত্র। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব এখন আদালত নয়, সরাসরি গণমাধ্যমের মঞ্চে। জানা গেছে, নগরীর শালবাগান এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান সিজার ও তার ছোট ভাই মাহমুদ হাসান শিশিল- বাবা মাহবুব আলম।

 রাজশাহীতে পরিচিত ছিলেন ‘মাহবুব কন্ট্রাক্টর’ নামে। তার মৃত্যুর পর প্রায় ২০-২৫ কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ছোট ভাই শিশিল রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি। গত বৃহস্পতিবার তার নেতৃত্বে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন।

তাদের ধারণা, সেখানে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি অবস্থান করছিলেন। তল্লাশি চালানো হয় ষষ্ঠতলার একটি ফ্ল্যাটে, যা ছিল সিজারের শাশুড়ি হাবিবা আক্তার মুক্তার বাসা। এ সময় রনি ফোনে জানান, তিনি অনেক দূরে আছেন। পরে ওই অভিযান শেষ হয়। এরপর হাবিবা আক্তার মুক্তা অভিযোগ করেন, রনিকে ধরার নামে নয়, বরং তার জামাতা সিজারকে ভয় দেখাতে পরিকল্পিতভাবে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। ‘

মব’ সৃষ্টি করে আতঙ্ক তৈরি ও লুটপাট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন শিশিলসহ কয়েকজনের নামে। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তা ও সিজার। সেখানে সিজার অভিযোগ করেন, ছোট ভাই সম্পত্তির পুরোটা দখল করে নিয়েছেন, এমনকি বাবার দুটি আগ্নেয়াস্ত্রও নিজের নামে নিয়েছেন।

এ জন্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ডিও লেটার কাজে লাগানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে ছোট ভাই শিশিলের ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে ছবি দেখিয়ে তাকে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ প্রমাণের চেষ্টা করেন সিজার। এর জবাবে একইদিন বিকেলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে শিশিল বলেন, আসলে তার ভাই-ই ছাত্রলীগ করতেন।

প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি তাজুল ইসলাম ফারুকের দেওয়া একটি প্রত্যয়নপত্র, যেখানে সিজারকে ছাত্রলীগকর্মী বলা হয়েছে। শিশিল দাবি করেন, তারা কোনো মব তৈরি করেননি। বরং তারা খবর পেয়েছিলেন যে, ভবনটিতে যুবলীগ নেতা অবস্থান করছেন। উত্তেজনা কমাতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতেই তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে জানা যায়, সেটি বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি।

 দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা দাবি করে তিনি সেটি প্রত্যাহারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিশিলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফায়সাল সরকার ডিকো, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক, সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান জনি, ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ।