ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইরানের শীর্ষ আলেমের ফতোয়া

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি ধর্মীয় আদেশ বা ফতোয়া জারি করেছেন ইরানের শীর্ষ শিয়া ধর্মীয় নেতা।
সোমবার (৩০ জুন) এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই ফতোয়ায় তিনি ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে ‘ঈশ্বরের শত্রু’ বলে উল্লেখ করেন। গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি এই ফতোয়ায় বিশ্বের সব মুসলমানের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে।
কারণ তারা ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্বকে হুমকি দিয়েছে। মাকারেম তার ফতোয়ায় বলেন, ‘যে ব্যক্তি বা শাসক ইসলামের নেতা বা শীর্ষ ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে হুমকি দেয়, সে ‘যুদ্ধপিপাসু’ বা ‘সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ব্যক্তি’ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
আরও পড়ুনঃ ব্রেকিং নিউজ: মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা ইরানি আইন অনুযায়ী, যারা সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাদের শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড, শূলবিদ্ধকরণ, অঙ্গচ্ছেদ অথবা নির্বাসন। ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, ‘এই শত্রুদের সঙ্গে মুসলিম বা কোনও ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে কোনও ধরণের সহযোগিতা বা সমর্থন অবৈধ এবং নিষিদ্ধ। সকল মুসলমানের উচিত এই শত্রুদের কথাবার্তা ও কাজের জন্য তাদেরকে অনুতপ্ত করা।’
এছাড়াও এতে বলা হয়েছে, যদি কোনও মুসলমান তার ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পথে ক্ষতি বা কষ্টের সম্মুখীন হয়, তাহলে সে সৃষ্টিকর্তার রাস্তায় সংগ্রামরত একজন যোদ্ধার পুরস্কার লাভ করবে, ইনশাআল্লাহ। ১৩ জুন থেকে ১২ দিনব্যাপী এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে। ইরানে বোমা হামলা চালিয়ে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করে ইসরায়েল।
এর জবাবে তেহরান ইসরায়েলের শহরগুলোতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েল জানায়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা, যদিও তেহরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। আরও পড়ুনঃ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেই আদালতে নেতানিয়াহু এই সংঘর্ষ চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলা করে। ফতোয়া কী? ফতোয়া হলো ইসলামী আইনের একটি ব্যাখ্যা, যা একজন শীর্ষ পর্যায়ের ধর্মীয় নেতা জারি করেন। এই আদেশ সমস্ত মুসলমান, ইসলামী সরকার এবং ব্যক্তিকে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়। ইরানি ধর্মীয় নেতারা এর আগেও ফতোয়ার দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা, যা জানাল ইরান ইরানের অন্যতম ভয়ংকর ফতোয়া জারি হয় ১৯৮৯ সালে। লেখক সালমান রুশদির “শয়তানি আয়াত” উপন্যাস প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করা হয়। অনেক মুসলমান মনে করেছিলেন যে বইটি তাদের ধর্মকে অবমাননা করেছে।
সেই ফতোয়ার পর রুশদিকে আত্মগোপনে যেতে হয়। তারপরও এক জাপানি অনুবাদক নিহত হন এবং বইটির প্রকাশকদের ওপর একাধিক হামলা হয়। এরপর থেকে রুশদি বহুবার হত্যাচেষ্টার শিকার হন। ২০২৩ সালে নিউইয়র্কে এক ছুরিকাঘাতে তিনি একটি চোখ হারান।