কে এই মুসলিম ‘বিস্ময় তরুণ’ জোহরান নিউইয়র্কের মেয়র হতে যাচ্ছেন!
আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে নতুন ইতিহাস রচনা করতে চলেছেন জোহরান মামদানি। ইতিহাসে কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ শহর নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হননি কোন মুসলিম। এবার সেই ইতিহাসই গড়তে চলেছেন ৩৩ বছর বয়সী তরুণ তুর্কি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম তরুণ জোহরান মামদানি।
ইতিহাস বলে আমেরিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলটিতে ইতিপূর্বে ডেমোক্রেট প্রর্থীদের জয়জয়কার। রিপাবলিকানরা নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে বারবার। বর্তমানে জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে প্রাইমারি লেভেলে ডেমোক্রেটদের হয়ে লড়াইয়ের জন্য নির্বাচিত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
ডেমোক্রেট ভোটাররা দলের অতীতের কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত প্রাক্তন মেয়র অ্যান্ড্রু কুওমোকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও চূড়ান্ত ফলাফল জানাতে এখনও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। এ পর্যন্ত ডেমোক্রেটদের প্রার্থী নির্বাচনের প্রাথমিক ভোটের ৯৩% গণনা শেষে প্রায় ৪৪% ভোটই পেয়েছেন জোহরান মামদানি। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন মেয়র অ্যান্ড্রু কুওমো পেয়েছেন ৩৬.৪% ভোট।
সুতরায় নির্দ্বিধায় এখন বলাই যায় নিউইয়র্ক সিটির আগামীর মেয়র হতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম এই তরুণ। আরও পড়ুনঃ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এখন প্রশ্ন হলো কে এই জোহরান মামদানি? যে শাসন করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ শহর নিউইয়র্ক? আমেরিকানরা যেখানে বারবার বাগড়া দিচ্ছেন ইসরায়েলের কাপুরুষোচিত বর্বর হামলার হাত থেকে ফিলিস্তিনকে রক্ষা করতে। সেখানে একজন যেনো পুরো ব্যাতিক্রম।
তিনি আর কেউ নন নিউইয়র্ক সিটির আগামীর গভর্নর জোহরান মামদানি। বারবার গলা ফাটিয়েছেন গাজা বাসীর পক্ষে, ইসরায়েলের প্রতি তীব্র নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন সেই কলেজ লাইফ থেকেই।
আরও পড়ুনঃ জানা গেল ভারত-পাকিস্তানে ঈদের তারিখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম হলেও উগান্ডার কাম্পালায় জন্ম তার। মাত্র সাত বছর বয়সেই পরিবারের সাথে পাড়ি দেন নিউইয়র্কে। তিনি ব্রঙ্কস হাই স্কুল অফ সায়েন্সে পড়াশোনা করেন এবং পরে বোডোইন কলেজ থেকে আফ্রিকানা স্টাডিজে ডিগ্রি অর্জন করেন, যেখানে তিনি প্যালেস্টাইনে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিসের ক্যাম্পাস অধ্যায়ের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। মামদানির স্ত্রী ব্রুকলিন একজন সিরিয়ান শিল্পী।
তার মা, মীরা নায়ার, একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এবং তার বাবা অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি, কলম্বিয়াতে শিক্ষকতা করেন। আর বাবা-মা উভয়ই হার্ভার্ডের প্রাক্তন স্টুডেন্ট। আমেরিকানদের কাছে মামদানি নিজেকে একজন জনগণের বন্ধু জনগণের প্রার্থী এবং দক্ষ সংগঠক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
তিনি ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের প্রতি বেশ দুর্বল এবং চরম ধার্মিক টাইপের। নিয়মিত মসজিদে যাওয়া, আর ধর্ম-কর্ম সঠিকভাবে পালন করা এই ব্যক্তিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে আমেরিকানদের কাছে।
আরও পড়ুনঃ যে কারণে ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা ২-৩ বছর পিছিয়ে গেছে: ইসরায়েল রাজনীতিতে প্রবেশের আগে, তিনি একজন আবাসন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছিলেন, কুইন্সের নিম্ন আয়ের বাড়ির মালিকদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করেছিলেন। আর মেয়র নির্বাচনের আগে তার দেওয়া রূপরেখা রীতিমতো মন ছুঁয়ে যায় আমেরিকান ডেমোক্রেট ভোটারদের।
নিউইয়র্ক সিটি জুড়ে যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মামদানী তাতে আগামীর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ এই শহর শাসন করবেন তিনি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
