আমরা খুব খুশি যুদ্ধ শেষ হয়েছে এটা শুরুর দরকারই ছিল না’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর মঙ্গলবার থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এক অনিশ্চিত অস্ত্রবিরতি কার্যকর হতে শুরু করে। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর দুই দেশ থেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে।
শুরুতে উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের ওপর তিনি কঠোর সমালোচনা করেন। ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলকে এখন শান্ত করতে হবে। ওরা এতদিন ধরে যুদ্ধ করছে যে নিজেরাও জানে না কী করছে।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েল তার নির্দেশে ভবিষ্যৎ হামলা বন্ধ করেছে এবং সমঝোতা রক্ষা করেছে। আরও পড়ুনঃ যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খুলল চীন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এই যুদ্ধ শেষে একে ‘মহান বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ইরানি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ইরান সফলভাবে যুদ্ধ শেষ করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান আইয়াল জামির জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ করেছি, তবে ইরানের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান এখানেই থেমে যাবে না।’ এ যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েলের সব অঞ্চলে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
একই সঙ্গে ইরান ও ইসরায়েল উভয় দেশেই জনগণের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তেহরানের এক বাসিন্দা রেজা শরিফি বলেন, ‘আমরা খুব খুশি… যুদ্ধ শেষ হয়েছে। এটা শুরুই হওয়া উচিত ছিল না।’ আরও পড়ুনঃ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করায় নেতানিয়াহুর ওপর ‘বিরক্ত’ ট্রাম্প তেল আবিবের আরেক বাসিন্দা, সফটওয়্যার প্রকৌশলী আরিক ডায়মান্ট বলেন, ‘আমাদের বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে দেরিতে হলেও যুদ্ধ থামলো।
আমি চাই, এই যুদ্ধবিরতি যেন নতুন শুরুর পথ হয়ে দাঁড়ায়।’ যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম হঠাৎ কমে যায় এবং শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ইসরায়েলে যেসব নাগরিক যুদ্ধের সময় বিদেশে ছিলেন, তাদের জন্য মঙ্গলবার থেকে উদ্ধার ফ্লাইট চালু করা হয়। প্রথম ফ্লাইটেই অনেকেই ফিরে আসেন।
আরও পড়ুনঃ এবার নেতানিয়াহুকে ফোন করে কড়া হুশিয়ারী বার্তা দিলেন: ডোনাল্ট ট্রাম্প যদিও অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে, তবুও এই শান্তি কতটা টিকে থাকবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ শেষ করেনি, বরং এটি এক নতুন কৌশলগত ধাপে প্রবেশ করেছে।
পরিস্থিতি শান্তির দিকে অগ্রসর হলেও, বাস্তবতা বলছে, সবকিছু নির্ভর করছে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত ও পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার ওপর। যুদ্ধ শেষ হওয়ার মতো সিদ্ধান্ত একতরফাভাবে নয়, বরং উভয়পক্ষের সদিচ্ছা ও সহনশীলতার মাধ্যমেই টেকসই হতে পারে