ইরানের পর টার্গেট রাশিয়া? সরাসরি যুদ্ধে নামছেন পুতিন!

ইরানের পর টার্গেট রাশিয়া? সরাসরি যুদ্ধে নামছেন পুতিন!

ইরানে মার্কিন হামলার পর এবার নতুন গুঞ্জন উঠেছে রাশিয়া ঘিরে। সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উত্তেজনা শুধু মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না—এর প্রভাব পড়তে পারে ইউরেশিয়ার পরাশক্তি রাশিয়ার ওপরও।

 তাদের ধারণা, যদি ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে, তাহলে আমেরিকা ও পশ্চিমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে রাশিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরটি-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেকেরই ধারণা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়তো তাদের পাশ কাটিয়ে যাবে—কিন্তু বাস্তবে তা হবে না।

 প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ইতোমধ্যেই এক প্রকার যুদ্ধে জড়িয়ে গেছে। আমেরিকাকে যদি এখনই থামানো না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে রাশিয়াকেও টার্গেট বানাতে পিছপা হবে না তারা।

আরও পড়ুনঃ মৃত দাবি করা খামেনির সেই উপদেষ্টা জীবিত আছেন বিশেষজ্ঞদের মতে, এক পর্যায়ে পশ্চিমারা দাবিও তুলতে পারে—ইরানের মতো রাশিয়াকেও পারমাণবিক অস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়, অথবা অন্য কোনো অজুহাতে রাশিয়ার ওপরও হামলার পথ তৈরি করবে তারা।

 ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার ডুগিন আরটির প্রতিবেদনে বলেন, “ইসরাইল ও ইউক্রেন একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে—তারা পশ্চিমাদের হয়ে প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত। যেমন ইসরাইল দায়মুক্তভাবে গাজায় বোমা বর্ষণ করছে, তেমনি ইউক্রেন বছরের পর বছর ডনবাসে একই কাজ করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এই মডেল এখন স্পষ্ট। যদি কোনো কারণে ইরান এই সংঘাতে পিছিয়ে পড়ে, তাহলে রাশিয়ার নিরাপত্তার ওপরও সরাসরি প্রভাব পড়বে।”

 আরও পড়ুনঃ হামলার খবর কি আগেই পেয়েছিল ইরান উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক বার্তা দিয়েছেন—যেখানে তিনি শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হবেন না, বরং দেশটির শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের কথাও বলেছেন। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই অবস্থান ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতেও নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

 বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল এখন পশ্চিমাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে এবং অনেকাংশে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সফলও হয়েছে। কিন্তু এটাই এখন রাশিয়ার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, “ইসরাইল মডেল” অনুসরণ করে রাশিয়াতেও সরকার পরিবর্তন কিংবা সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এর পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে ট্রাম্পের “Make America Great Again” ক্যাম্পেইনের বাস্তবায়ন।

 আরও পড়ুনঃ চীনা পণ্যে ১০৪% মার্কিন শুল্ক কার্যকর আজ থেকেই বিশ্লেষকদের মতে, সন্ত্রাসবাদের অজুহাতে ও পারমাণবিক স্থাপনার দোহাই দিয়ে ইতোমধ্যে আমেরিকা ও তার মিত্ররা ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করে ফেলেছে। এখন তাদের নজর ইরানের দিকে। আর এ অবস্থায় ইরানকে যুদ্ধে টিকিয়ে রাখতেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়া শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, সম্ভবত সামরিকভাবে ইরানকে সহায়তা করবে, যাতে মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যায়। এ পরিস্থিতি যদি আরও তীব্র হয়, তাহলে সত্যিই কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে পৃথিবী? এই প্রশ্নের উত্তর জানার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী। সূত্রঃ আর টি নিউজ