পারমাণবিক কর্মসূচি কোন পথে, স্পষ্ট করলো ইরান

পারমাণবিক কর্মসূচি কোন পথে, স্পষ্ট করলো ইরান

ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুত পুনরুদ্ধার ও জোরালো করার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। এমনটি জানিয়েছেন দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি।

মোহাম্মদ ইসলামির একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর যে ক্ষতি হয়েছে, তার মাত্রা মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় মেরামতের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেয়া হয়েছে। খবর আলজাজিরার। ইসলামি আরও বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি এবং যে অংশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোর মূল্যায়ন চলছে। পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি আগেই নেয়া ছিল।

আমাদের পরিকল্পনা হলো উৎপাদন বা সেবায় কোনো ধরনের বিঘ্ন যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করা।’ আরও পড়ুনঃ ইরানের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে যারা আঞ্চলিক শক্তিধর ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক দশক ধরেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়।

 পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান গোপনে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে, যদিও তেহরান বারবার বলেছে তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, বিশেষত জ্বালানি ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়ে উত্তেজনা আবারও তুঙ্গে ওঠে। ইরান দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। গত ২২ জুন তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

এর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে গুরুত্বপূর্ণ ফোরদোতে হামলা চালায় তেল আবিব। তবে ইসরায়েল এসব দায় স্বীকার করেনি। আরও পড়ুনঃ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত বেশ কয়েকটি দেশ: মেদভেদেভ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ইরান যদি দ্রুত পারমাণবিক কর্মসূচি পূনর্গঠন করে এবং আরও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

এক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে বা কূটনৈতিক চাপে ইরানকে ফের আলোচনায় বসাতে চাইতে পারে। মোহাম্মদ ইসলামির বক্তব্য স্পষ্ট করছে যে, ইরান সাম্প্রতিক হামলার প্রভাব খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে চায় এবং কোনো প্রকার উৎপাদন বিঘ্ন না ঘটিয়ে তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর।

এই ঘোষণা ইঙ্গিত দেয় যে তেহরান কোনোভাবেই পিছু হটতে রাজি নয়, বরং আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে চায়। আরও পড়ুনঃ সামনে এল ইসরায়েলের অপারেশন নার্নিয়ার ‘হিট লিস্ট’ ইরানের এমন অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।