টিউশনির পাশাপাশি পাঠাওয়ে কাজ করা জুলাইযোদ্ধা কাতরাচ্ছেন বিছানায়

টিউশনির পাশাপাশি পাঠাওয়ে কাজ করা জুলাইযোদ্ধা কাতরাচ্ছেন বিছানায়

সরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী ইমন কবির। লেখাপড়ার খরচ চালাতে টিউশনির পাশাপাশি পাঠাওয়ে কাজ করতেন, পরিবারকে করতেন বিভিন্নভাবে সহযোগিতা।

 কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরা এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত তিনি। পরে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দীর্ঘদিন এবং পায়ে পড়ানো হয় ৪টি রিং, এরমধ্যে একটির জয়েন্ট ভেঙে যায়। ফলে তীব্র ব্যথা নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন এই জুলাইযোদ্ধা।

জানা গেছে, যশোরের ষষ্টিতলাপাড়া এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে ইমন কবির। তিনি যশোর সরকারি পলিটেকনিক কলেজের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ১৯ জুলাই বাড্ডা-আফতাবনগর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হন।

তাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ ইমনকে ঘিরে ফেলে। খুব কাছ থেকে তার পায়ে পরপর কয়েকটি গুলি করে। আরও পড়ুনঃ ১৬ জনের স্ক্রিনশট ‘ফাঁস’ করে যা বললেন নিলা ইসরাফিল পরে ইমনসহ আরও গুরুতর আহত তিনজনকে অ্যাম্বুলেন্সে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তখনো পুলিশ বাধা দিয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরও গুলি করতে চেয়েছিল। ওই সময় ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে পুলিশ পিছু হটে। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে ইমন কবির বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে বন্ধুদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হই। পরে আমাকে একটি হসপিটালে ভর্তি করা হয় এবং আওয়ামী সরকারের পতনের পর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে আমার পায়ে ৪টি রিং পড়ানো হয় এবং কর্তৃপক্ষ আমাকে রিলিজ দিয়ে দেয়। এরপর থেকে আমি বাড়িতে অবস্থান করছি। কিন্তু পায়ের চারটি রিংয়ের মধ্যে একটির জয়েন্ট ভেঙে গেছে।

 পায়ে প্রতিনিয়ত ব্যথা করছে। সবমিলিয়ে আমার পায়ের অবস্থা ভালো নয়, তাই আমার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। আরও পড়ুনঃ ইসরায়েলকে যে বার্তা দিল তুরস্ক তিনি বলেন, বাড়িতে আসার পর বেশকয়েকবার পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছি, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো গুরুত্ব দেয়নি। ভর্তি হতে চাইলে তারা আমার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ও জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে কেউ তেমন খোঁজ-খবর নিচ্ছে না।

ইমন বলেন, আমার বাবা ছোট্ট একটি ব্যবসা করেন। আমাদের পরিবারে ৪ জন সদস্য। বাবার আয়ে সংসার চলে না বিধায় লেখাপড়ার পাশাপাশি পাঠাওতে কাজ করতাম। পড়াশোনা ও কাজের ফাঁকে দুটি টিউশনি করাতাম। এতে নিজের খরচ চলত ও পরিবারকে সাহায্য করতে পারতাম, এখন পারছি না। এখন বিছানায় শুয়ে আমার দিন কাটছে। আরও পড়ুনঃ যেসব প্রতীক চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে এনসিপি তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চিকিৎসাবাবদ প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে।

 এরমধ্যে জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে এক লাখ, সরকারিভাবে দুই লাখ টাকা পেয়েছি। পাশাপাশি আমাদের যে সঞ্চয় ছিল, তাও শেষ হয়ে গেছে