রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার উপপরিচালকের ছেলের মৃত্যু

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর উপপরিচালকের ছেলে মাইকেল গ্লস। স্বাধীন রুশ গণমাধ্যমের তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের পারিবারিক শোক বার্তা বলা হয়েছে, ২১ বছর বয়সী মাইকেল আলেজান্ডার গ্লসের গত বছরের ৪ এপ্রিল ‘পূর্ব ইউরোপে’ মৃত্যু হয়।
গ্লসের মা জুলিয়েন গ্যালিনা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিআইএর ডিজিটাল উদ্ভাবন বিভাগের উপপরিচালক নিযুক্ত হন। মাইকেলের বাবা-মা দুজনই সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছেন। রুশ ইনভেস্টিগেটিভ ওয়েবসাইট ‘আই-স্টোরিজ’ জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরকারী ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি বিদেশির মধ্যে গ্লস একজন। ফাঁস হওয়া একটি ডেটাবেইস থেকে জানা যায়, তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। গ্লসের পরিবার তাদের শোকবার্তায় তার ‘মহৎ হৃদয় এবং যোদ্ধা আত্মার’ কথা উল্লেখ করেছে।
তাঁরা লিখেছে, ‘মাইকেল তার নিজস্ব বীরের জীবনযাত্রা তৈরি করেছিল। দুঃখজনকভাবে সে গত ৪ এপ্রিল পূর্ব ইউরোপে নিহত হয়।’ তবে শোকবার্তায় রাশিয়া বা ইউক্রেন এবং তার মৃত্যুর পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইকেল গ্লস লিঙ্গসমতা এবং পরিবেশবাদী প্রতিবাদী গোষ্ঠীগুলোতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ‘রেইনবো ফ্যামিলি’ নামে একটি বামপন্থী পরিবেশবাদী প্রতিবাদী গোষ্ঠীতে যোগ দেন। ২০২৩ সালে তিনি তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ভূমিকম্পের পর ত্রাণকাজেও সহায়তা করেছিলেন। তুরস্কে থাকাকালে গ্লস রাশিয়ায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে রাশিয়ার ভিসা পাওয়ার পর তিনি দেশটি ভ্রমণ করেন।
এরপর মস্কোতে পৌঁছে তার নথিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। আই-স্টোরিজের প্রাপ্ত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, তাকে একটি রুশ প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তিনি মূলত নেপালি চুক্তিভিত্তিক সৈন্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন। তালিকাভুক্তির তিন মাস পর তাকে ইউক্রেনে একটি অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের সদস্য হিসেবে পাঠানো হয়। গ্লসের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। তার এক বন্ধু বলেছেন, রুশ সরকার তার পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানিয়েছে, তবে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।