তাসনিম জারার প্রশ্নের জবাব দিলেন সারজিস

তাসনিম জারার প্রশ্নের জবাব দিলেন সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের বিশাল গাড়িবহর নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা থেকে বিমানে করে নীলফামারীর সৈয়দপুর যান তিনি।

সৈয়দপুর থেকে সড়কপথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ যান সারজিস। সেখান থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে এনসিপির এ নেতা জেলার বিভিন্ন উপজেলা সফর করেন। বাড়ি ফেরার পথে সারজিস আলমের এই ‘শোডাউন’ নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই তার গাড়িবহর ও শোডাউন আয়োজনে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এ বিষয়ে ফেসবুকে সারজিসের উদ্দেশে খোলাচিঠি লেখেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা।

এত বড় আয়োজন কীভাবে হলো তার ব্যাখ্যা চান তাসনিম জারা। এরপরই ফেসবুকে খোলা চিঠির জবাব দেন সারজিস। সারজিস লেখেন, ‘প্রিয় তাসনিম জারা আপু, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার খোলা চিঠির উত্তরের পূর্বে দুটি বিষয় বলতে চাই। প্রথমত, আমাদের চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা থেকে সবার আগে যে বিষয়টি বাদ দিতে হবে সেটি হচ্ছে- একজন নতুন করে জাতীয় রাজনীতিতে এসেছে মানেই তার পরিবার সহায়-সম্বলহীন, অসহায়, নিঃস্ব না।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতারা চাঁদাবাজি, লুটপাট করে এসব কাজ করেছে বলে, একই কাজ করে অন্যরাও সেটা করবে বিষয়টি তেমনও নয়। আমার এই মুহূর্তে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করার সামর্থ্য নেই মানে এই নয় যে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের সেই সামর্থ্য নেই।’ দ্বিতীয়তঃ ‘কতিপয় সোশ্যাল মিডিয়া বুদ্ধিজীবী তাদের জায়গা থেকে যেভাবে রাজনীতিকে কল্পনা করেন সেটা কোন আদর্শ পৃথিবীর চিত্র হতে পারে।

 কিন্তু বাংলাদেশের মতো বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারা ধারণকারী জনগণ সম্বলিত একটি দেশের চিত্র নয়। এমনকি বাংলাদেশের একটি জেলার রাজনৈতিক কালচারের সাথে অন্য একটি জেলার রাজনৈতিক কালচারেরও পুরোপুরি মিল নেই। তাই আমার চোখের সামনে আমার আসনে যা দেখছি সেটা দিয়ে অন্য আসনও তুলনা করা যায় না।

 রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলগত অবস্থান বিবেচনায় সেই ইকুয়েশনগুলো ভিন্ন হয়।’ ‘আমরা নতুন বন্দোবস্ত চাই। কিন্তু নতুন বন্দোবস্ত বলতে আমরা যেটা কল্পনা করি সেটা ছয় মাসের মধ্যে এপ্লাই করলে অলমোস্ট ৯৫+% ক্ষেত্রে জামানত হারানোর সম্ভাবনা থাকবে। তার মানে কি আমরা নতুন বন্দোবস্ত চাই না? অবশ্যই চাই। কিন্তু সেটা কখনো ছয় মাসের ব্যবধানে ১৮০ ডিগ্রি উল্টে যাবে না বরং সময়ের সাথে সাথে ১০% ২০% ৩০% এভাবে পরিবর্তিত হবে।

 এক সময় হয়তো শতভাগ নতুন বন্দোবস্ত দেখতে পাবো।’ ফেসবুকের রাজনীতি আর মাঠের রাজনীতি এক নয়। আপনার প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই করার জনবল এবং সামর্থ্য আপনার যদি না থাকে কিংবা আপনি দেখাতে না পারেন তাহলে মাঠের রাজনীতিতে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। অন্য নেতা তো দূরের কথা সাধারণ জনগণও আপনাকে গোনায় ধরবে না।

 কারণ মানুষ স্বভাবতই ক্ষমতামুখী। আমাদের যেমন নতুন বন্দোবস্তের দিকে যেতে হবে তেমনি মাঠের রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য পূর্বের যেই বন্দোবস্তগুলো চাইলেই এখনই ছুঁড়ে ফেলা সম্ভব নয় সেগুলো কেউ পাশে রেখে আপাতত চলতে হবে। যেদিন সেগুলোও ছুঁড়ে ফেলার সুযোগ আসবে সেদিন সেগুলোর ছুড়ে ফেলতে হবে।’