৩০০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী যারা দেখে নেন।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন সামনে রেখে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী করাসহ নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে দলটি। প্রতিদিনই দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা। দলটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে দলের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাওয়ারও আশা করছে। জামায়াতের দলীয় সূত্র বলছে, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দুই স্তরের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। প্রাথমিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিংহভাগ সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। তবে এটা অফিসিয়ালি ঘোষণা নয়। এটা দলের প্রাথমিক বাছাই। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হলে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। জামায়াতের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন, যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে বিভিন্ন কৌশলে তারা এসব আসনে সভা-সমাবেশের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। অবশ্য নির্বাচনের আগে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য কিংবা জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাবে। এদিকে সারাদেশে প্রাথমিক প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর স্থানীয় পর্যায়ে জামায়াত ও ছাত্র সংগঠন শিবির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা প্রার্থীদের ছবি দিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও নির্বাচনি বোর্ড পরিচালনার সভাপতি অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল সারাদেশে বিভিন্ন নির্বাচনি আসনে গিয়ে দলের রোকনদের মতামত নিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের কেন্দ্রীয় এক নেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, যে তালিকার কথা বলা হচ্ছে সেটি এক ধরনের প্রাথমিক তালিকা। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে ওই তালিকা আরও সংশোধন হতে পারে। প্রাথমিক তালিকায় প্রার্থী যারা ঢাকা-১৫ আসনে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচন করেছিলেন। আগামী নির্বাচনে দুটি আসনে ভোট করতে চান তিনি। নিজ বাড়ি সুনামগঞ্জ হওয়ায় সেখানকার একটি আসনের পাশাপাশি ঢাকা-১৫ আসনে নির্বাচন করবেন। অন্যদিকে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনা-৫, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান রাজশাহী-১, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কুমিল্লা-১১, চট্রগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এছাড়া সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ কক্সবাজার-২, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের সিলেট-১, প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ ময়মনসিংহ-৫, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও নির্বাচনি বোর্ড পরিচালনার সভাপতি অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ সাতক্ষীরা-১, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। ঢাকা বিভাগ এই বিভাগে শরীয়তপুর-১ (পালং-জাজিরা) আসনে ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ তালুকদার, শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও সখিপুর) অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল ও শরীয়তপুর-৩ (ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট) আসনে মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম। ফরিদপুর-১ আসনে ইলিয়াছ মোল্লা, ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনে মাওলানা সোহরাব হোসেন, ফরিদপুর-৩ আসনে অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, ফরিদপুর-৪ (ভাংগা, সদরপুর ও চরভ্রদাসন) আসনে মাওলানা সরোয়ার হোসেনকে জামায়াতের প্রার্থী করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ ১ আসনে (মুকসুদপুর- কাশিয়ানী আংশিক) আশরাফ ফারুকী। মাদারীপুর-৩ আসনে মো. রফিকুল ইসলাম। মানিকগঞ্জ ১ (ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়) আসনে ডা. আবু বকর সিদ্দিক এবং মানিকগঞ্জ ৩ (সদর-সাটুরিয়া) অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন। গাজীপুরের ৫টি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াত। গাজীপুর-২ আসনে (গাজীপুর সিটির একাংশ ও টঙ্গী) মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য হোসেন আলী, গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর) আসনে গাজীপুর জেলা আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া ও সদর উপজেলা একাংশ) আসনে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও মহানগরীর মেট্রো সদর থানার আমির অধ্যক্ষ সালাহউদ্দিন আইউবী, গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার একাংশ) আসনে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য খায়রুল হাসান। টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে অধ্যক্ষ মন্তাজ আলী, টাঙ্গাইল-২ (ভুঞাপুর-গোপালপুর): হুমায়ূন কবীর, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল): হুসনে মোবরক বাবুল, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী): প্রফেসর খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-৫ (টাঙ্গাইল সদর): আহসান হাবীব মাসুদ, টাঙ্গাইল-৬ (বাসাইল-সখীপুর): শফিকুল ইসলাম খান, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর): অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ তালুকদার, টাঙ্গাইল-৮ (দেলদুয়ার-নাগরপুর): ডাক্তার আব্দুল হামিদ। কিশোরগঞ্জ-১ মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া; কিশোরগঞ্জ-২ শফিকুল ইসলাম; কিশোরগঞ্জ-৪ মোহাম্মদ রোকন রেজা; কিশোরগঞ্জ-৫ রমজান আলী এবং কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে কবির হোসেন। নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আনোয়ার হোসাইন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে নির্বাচন ড. ইকবাল হোসাইন ভুঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমেদ। সিলেট বিভাগ সিলেট-১ আসনে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট-২ প্রফেসর এম এ হান্নান, সিলেট-৩ মাওলানা লোকমান আহমদ, সিলেট-৪ জয়নাল আবেদীন, সিলেট-৫ হাফেজ আনোয়ার হোসেন খান ও সিলেট-৬ আসনে সেলিম উদ্দিন।
মৌলভীবাজার-১ মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মৌলভীবাজার-২ মো. শাহেদ আলী, মৌলভীবাজার-৩ মো. আবদুল মান্নান ও মৌলভীবাজার-৪ আসনে মো. আবদুর রব। হবিগঞ্জ-১ আসনে মো. শাহজাহান আলী, হবিগঞ্জ-২ শেখ জিল্লুর রহমান আজমী, হবিগঞ্জ-৩ অধ্যক্ষ