নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেত্রী হলেন বিটিভির সংবাদ উপস্থাপিকা

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেত্রী হলেন বিটিভির সংবাদ উপস্থাপিকা

ছিলেন ইবি ছাত্রলীগের নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক। পরবর্তীতে সভাপতি পদ প্রত্যাশী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে দলের তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়ে দৌঁড়ঝাপে কমতি করেননি। বিগত পনের বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো অপকর্মের মূলে যে নিষিদ্ধ সংগঠনের নাম জড়িত সেই সংগঠনের সকল কার্যক্রমে ছিল যার সরব উপস্থিতি, সেই ইসমেত জেরিন বিনতে নিজাম ওরফে জেরিন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন দেশের জাতীয় টেলিভিশন বিটিভির সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে।

সাম্প্রতিক সময়ে তার এই নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। 

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’–এর ক্ষমতাবলে  নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। 

গত ১৬ বছর যাবত খু*ন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ক্যাম্পাস দখল, যৌ*ন নিপীড়ন, ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনসহ অপরাধের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে তাদের বিচরণ ছিল না। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্রলীগ কর্তৃক সংগঠিত বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের দলিল এখনও মানুষের মুঠোফোনে, হাতে হাতে। 

জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সবসময়ই জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু স*ন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র–ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্র*মণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হ*ত্যা করেছেন এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছেন। 

এ ছাড়া সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন স*ন্ত্রাসী কার্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

এই অবস্থার মধ্যেই নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী জেরিনকে বিটিভির সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে নিয়োগ দেয়ায় সরকারের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 

জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইবি শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকার ও বিটিভির দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন, নিন্দা জানাচ্ছেন। 

বিস্ময় প্রকাশ করছেন জুলাই আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীরাও। এ ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।