ইসরাইলের ভেতরেই গোপন ঘাঁটি গেড়েছে ইরানের গোয়েন্দারা!

ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং নিরাপত্তা হুমকির অভিযোগে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী তিন নাগরিককে আটক করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত-এর সহায়তায় গত মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মাঝামাঝি সময়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (সাম্প্রতিক) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। আটকৃতদের মধ্যে দুজন টাইবেরিয়াস শহরের বাসিন্দা এবং অন্যজন জর্ডান উপত্যকার মোসাব হামরা বসতির নাগরিক। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা ইরানি এজেন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন গোপন টেলিগ্রাম চ্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে।
এই সংযোগ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের মে মাসে। ইরানের পক্ষে কাজ করা এসব এজেন্ট নিজেদের পরিচয় দিতেন “বামপন্থী” হিসেবে। গোপন যোগাযোগে তারা ইসরাইলি নাগরিকদের নানা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে নিয়োগ করেছিল। এই চক্র আর্থিক লেনদেনেও যুক্ত ছিল, যার অধিকাংশই হতো ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তান সফরে সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, অভিযুক্তরা তেল আবিব, হাইফা ও মেদানিয়া এলাকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্থাপনার বিস্তারিত তথ্য ইরানিদের কাছে সরবরাহ করেছে।
এসব তথ্যের মধ্যে ছিল—প্রবেশপথ, নিরাপত্তা রক্ষীদের অবস্থান, সিসিটিভি ক্যামেরার প্লেসমেন্ট, এমনকি তাদের নিজস্ব *লাইভ লোকেশন*ও পাঠানো হতো নিয়মিত। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ইরানি এজেন্টরা ইসরাইলি এক গুপ্তচরকে বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণের প্রলোভন দিয়েছিল, যাতে সে পরবর্তী হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় এবং একটি দল গঠনের ব্যবস্থা করে। যদিও অভিযুক্ত সেই পরিকল্পনায় সম্পূর্ণ সাড়া দেয়নি, তবে অন্যান্য অ্যাসাইনমেন্টে অংশ নিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ যুক্তরাষ্ট্রের ৩২৯ কোটি টাকার ড্রোন ভূপাতিত করল হুতিরা সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—ইরানে ইসরাইলি হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘হ্যাপ গ্রুপ’ নামে একটি যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম থেকে ইরানিদের সতর্ক করে বার্তা পাঠিয়েছিল অভিযুক্তদের একজন। হামলা শুরু হলে, একপর্যায়ে সে দুঃখ প্রকাশ করে পুনরায় বার্তা পাঠায় এবং ইরানিদের কাছ থেকে নির্দেশ পায় গ্রেনেড কেনা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের জন্য।
যদিও এসব কার্যক্রম শেষ পর্যন্ত সে সম্পন্ন করতে পারেনি। পরে তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও ধারণ করার জন্য, প্রতিটি ভিডিওর জন্য অর্থ প্রদানের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। আরও পড়ুনঃ ট্রাম্পের ‘তীব্র সমালোচনা’ করলেন ইলন মাস্ক ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ইসরাইলে নতুন নয়।
অতীতেও এ ধরনের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন ইসরাইলি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানেও ইসরাইলি গোয়েন্দাদের প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে অপারেশন রাইজিং লায়ন চলাকালে ইসরাইলি সংস্থাগুলোর তৎপরতা স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকেও নিয়মিতভাবে ইসরাইলের হয়ে কাজ করা সন্দেহে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়