প্রতিদিন অনেকেই আসে দেখা করতে, খালি আমার মনিই আসে না

প্রতিদিন অনেকেই আসে দেখা করতে, খালি আমার মনিই আসে না

জুলাই বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ হলো। স্বৈরাচার আওয়ামী শাসন থেকে মুক্তির পর দেশে পেলো নতুন সরকার। দেশের মানুষের মনে জাগলো নতুন আশা। ফিরলো না তারা, যারা দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিল। চব্বিশের ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় শহীদ সাব্বিরের মা রাশিদা খাতুনের কণ্ঠেও সেই আক্ষেপ।

 বলছিলেন, ‘প্রতিদিন অনেকেই আসে দেখা করতে, খালি আমার ছেলেই আসে না।’ সাব্বির হোসেন দেশের টানে নেমে পড়েছিলেন স্বৈরাচার তাড়ানোর যুদ্ধে। দেশ মুক্তি পেলো, ফিরলো না সাব্বিরেরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বুধবার গত ২ জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদ সাব্বির হোসেনের কবর জিয়ারত করেন

 এ সময় তারা শহীদের মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করলেন, জানালেন, তার এক সন্তান শহীদ হলেও এই সন্তানেরা রয়েছেন। যারা শহীদদের রক্তের ঋণ নিয়ে বেঁচে আছেন। আরও পড়ুনঃ লাশ নেয়নি কেও, বাবার মৃত্যুর খবরে ফোন বন্ধ করে দিলেন ছেলেও! যেদিন হারালেন তার সন্তানকে সেইদিনের শোকের কথা বলতে গিয়ে ধুকরে কেঁদে উঠলেন।

জানালেন, ‘সেদিন দুপুরে আমার এমনি এমনি কান্না আসতেছিলো। আমি তো জানতেছিলাম না আমার মনি ওই সময় দুনিয়া থেকে চলে যাচ্ছে। বিকালের দিকে একজন আসি আমাক কইলো, সাব্বিরের মা, তোমার সাব্বির তো পুলিশের গুলিত মারা গেছে। আমার তো দুনিয়াই থাইমে গেলো।’

শহীদের পরিবারের সাথে দেখা করলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক ইয়াশিরুল কবির সৌরভ, তানভির মাহমুদ মন্ডল ও গোলাম রাব্বানীসহ অন্য নেতাকর্মীরা। আরও পড়ুনঃ প্রবাসীর বাড়ি থেকে ৪ ভরি স্বর্ণ ও ২০ কেজি কুরবানির মাংস চুরি সহ-সমন্বয়ক তানভীর মাহমুদ মন্ডলের ভাষায়, জুলাই আন্দোলন সূচনা হয় ২ জুলাই থেকে, সেই স্মৃতি মনে করেই শহীদ ছাব্বিরের কবর জিয়ারতে এসেছি। কথা বলেছি বাবা-মার সাথে।

সন্তান হারিয়ে বলছিলেন তারা আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা। যেই স্পিরিট ধারন করে জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, সেই স্পিরিট সবার মাঝে বজায় থাকুক এবং আগামীতেও থাকবে। জুলাই বিপ্লবের নায়ক হিসেবে বীর শহীদদের কথাই স্মরণ করলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট।

তিনি জানান, জুলাই আন্দোলন শুরুর এক বছরে আমরা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। শহীদ সাব্বিরসহ সকল শহীদেরা তাদের জীবন দিয়ে আমাদেরকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করেছে। আমরা তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। আজ আমরা আমাদের ছেলেহারা মায়ের খোজ নিতে এসেছি।

আরও পড়ুনঃ চোরাই স্বর্ণ পরিয়ে স্ত্রীকে টিকটকে নাচান স্বামী, খুললো ৪০ ভরি গহনার জট! চব্বিশের জুলাইয়ের ১৮ তারিখ। রাজধানীর উত্তরা এলাকার আজমপুরে পুলিশের হামলার মুখে রাস্তায় প্রতিরোধে নেমে পড়েছিলেন সাব্বির হোসেন।

পুলিশ অনবরত গুলি চালায়। শহীদ হন সাব্বির। তিনি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার চড়িয়ারবিল এলাকার আমোদ আলীর ছেলে।