আজকে শুধু একটা মিসকল দিলাম, ঈদের পরেই টের পাবেন আন্দোলন: মোস্তফা

আজকে শুধু একটা মিসকল দিলাম, ঈদের পরেই টের পাবেন আন্দোলন: মোস্তফা

আজকে শুধু একটা মিসকল দিলাম, ঈদের পরেই টের পাবেন আন্দোলন কী জিনিস -বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। বুধবার দুপুরে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি। মিছিলটি নগরীর শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে দাবানল মোড়, পায়রা চত্বর, সিটি কর্পোরেশনের গেটে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেয়। এ সময় তিনি বলেন, এই সরকার অথর্ব সরকার। স্থানীয় সরকার বা দেশ পরিচালনা করতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। তারা আজকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে খেলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একমাত্র রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রতিনিধিরাই আন্দোলন সমর্থন দিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু আমরাই বৈষম্যের শিকার বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

 তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের ২০০৯ সালের যে আইনটি আছে, সেই আইন না মেনে আপনারা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত পরিষদকে বাতিল করে দিলেন। একদেশে দু’আইন কীভাবে হয়? এ সময় সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচন বয়কট করে যদি কেউ মেয়র হতে পারে, কিন্তু রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত পরিষদকে একই কলমের খোঁচায় বাতিল করে দেবেন, এটা রংপুরের মানুষ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, একটা মেয়র বা কাউন্সিলরকে অপসারণ করা হলে ৯০ দিনের মধ্যে ঐ শূন্য আসনে নির্বাচন দিতে হবে। কিন্তু কোনো কার্যক্রম হচ্ছে না। এমন একজন বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি দুর্নীতিবাজ। তিনি টাকা ছাড়া কিছু বোঝেন না। কোনো ফাইল সই করতে গেলে তাকে পারসেনটেজ দিতে হয়।

 রংপুরের মানুষের রক্ত চুষে অথর্ব বিভাগীয় কমিশনারকে সিটির দায়িত্ব দিয়ে রংপুর সিটি বাসির প্রতি একটা স্টিম রোলার চালানো হচ্ছে। এই বিভাগীয় কমিশনারকে সিটি কর্পোরেশন থেকে অপসারণ করতে হবে। একজন যোগ্য মানুষকে দিয়ে এই সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সাবেক মেয়র বলেন, বাংলাদেশের কোথায় কী হয়েছে জানি না, তবে এতটুকু বলতে পারি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। ১৫৮টি ভোট সেন্টারের মধ্যে একটি তেও কোন ধরনের অভিযোগ হয়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে প্রায় সকল প্রকার নাগরিক সেবা, যেমন জন্ম, মৃত্যু ও ওয়ারিশান সনদ, টিকা কার্যক্রম এবং ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নগরবাসী দারুণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

 সাবেক মেয়র বলেন, নগরবাসী চরম দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন কারণ জন্ম, মৃত্যু ও ওয়ারিশান সনদ ছাড়া জমি বণ্টনসহ সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে গমন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশের ভিসার আবেদনসহ প্রায় সকল প্রকার মৌলিক ও অপরিহার্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় বর্তমান প্রশাসক বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ ছাড়া কোন নাগরিক সেবা প্রদান করছেন না। রংপুর মহানগরের জনসংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ, এদের মধ্যে মাত্র ১ লক্ষ নগরবাসীর নিজস্ব বসত বাড়ি থাকলেও অধিকাংশ নগরবাসী ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন, ভূমিহীন, বাস্তুহারা, অবাঙ্গালী ক্যাম্পসহ খাস জমিতে বসবাস করায় তাদের কোন হোল্ডিং না থাকায় বর্তমান শর্ত আরোপের কারণে চরমভাবে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান যে ফাউন্ডেশন তৈরি করে দিয়েছিল, সেই গাড়ি সেই ঘোড়া দিয়ে আপনারা কোনোভাবে তালবাহানা করে চালাচ্ছেন।

 এই বিভাগীয় কমিশনার যদি আর কিছুদিন থাকে, তাহলে এই সিটি কর্পোরেশনের শুধু পাথর আর ইট থাকবে, তা ছাড়া আর কিছু থাকবে না। ঈদের পরে টানা কর্মসূচির ঘোষণা দেন এই সাবেক মেয়র। তিনি বলেন, এই সিটি কর্পোরেশনের সামনেই মঞ্চ বানিয়ে টানা কর্মসূচি পালন করা হবে। এ সময় বক্তব্য দেন ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোকছেদুল রহমান তরু, ১৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু, ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম দেওয়ানী, ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর লিঠন পারভেজ, ১৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মমদেল সরকার, ১২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, ১৮, ২০ ও ২২ নং ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা কাউন্সিলর ফেরদৌসী বেগম, সুপার মার্কেট দোতলা মালিক সমিতির সভাপতি জুয়েল আহমেদ, দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জাহেরুল ইসলাম।