মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার তিন সপ্তাহ পর তরুণের লাশ উদ্ধার

মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার তিন সপ্তাহ পর তরুণের লাশ উদ্ধার

ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় এক মাস আগে অপহৃত হয়েছিলেন মিলন হোসেন (২৩)। অপহরণকারীদের চাহিদামতো মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু ছেলেকে জীবিত ফেরত পাননি। গতকাল বুধবার রাতে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকা থেকে মিলনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মিলন হোসেন (২৩) ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গতকাল রাতে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার সেজান আলীর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছন থেকে নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত একটার দিকে মিলনের পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানানো হয়। অপহরণকারীরা ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন দুপুরে মুক্তিপণের তিন লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। পরে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। এরপরের দিন মুক্তিপণের দাবি বেড়ে দাঁড়ায় ১০ লাখে। তিন দিন পর ১৫ লাখ আর সবশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মিলনের বাবা পানজাব আলী বলেন, থানা-পুলিশের কাছ থেকে ছেলেকে উদ্ধারে যথেষ্ট সাড়া না পেয়ে ছেলের মুক্তির জন্য টাকা জোগাড় করেন। অপহরণকারীরা ৯ মার্চ রাত ১০টার ঢাকাগামী ট্রেনে টাকা নিয়ে উঠতে বলে। এরপর চলে মুঠোফোনে যোগাযোগ।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে টাকার ব্যাগটি বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে বলে অপহরণকারীরা। মিনিট দশেক পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তারা। সে সময় মিলনকে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় অপহরণকারীরা। কিন্তু খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে মিলনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, গতকাল বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন মিলনকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মিলনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলাম আমরা। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরেই মিলনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’