শেখ হাসিনার আশীর্বাদে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন সাবেক সচিব হারুন

শেখ হাসিনার আশীর্বাদে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন  সাবেক সচিব হারুন

এবি সিদ্দীক ভূইঁয়া :সাবেক সিনিয়র সচিব প্রশাসনের বরপুত্র শেখ ইউসুফ হারুন বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।এখানেই শেষ নয় দেশের ভিতরেও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ক্রয়কৃত জমি।  আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা  সাবেক সিনিয়র সচিব (প্রশাসনের বরপুত্র শেখ ইউসুফ হারুন )এখনো 
 সক্রিয় ভূমিকায় থেকে বতর্মান সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছরিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তিনি এখনো স্বপ্ন দেখেন আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যে কয়জন আমলারা প্রানান্ত চেষ্টা করেছিলেন,তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম ।অর্থের বিনিময়ে বাগিয়ে নেন এডিসি,ডিসি,এপিডি এর মত পদ।ছিলেন ততকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিজি।

মহা ক্ষমতাধর এই আমলা এ সি ল্যান্ড থাকা অবস্থায় সরকারী জমি নামজারি করে দেন।পরবর্তীতে এই বিষয়ে অভিযোগ হলে তিনি এ পি ডি পদের ক্ষমতা আর ভয় দেখিয়ে জুনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করে ফেলেন। আওয়ামী  লীগ এর শেখ হেলাল কে হাত করে তিনি হয়ে ছিলেন গোপালগঞ্জের ডিসি। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। শেখ হাসিনা কে সন্তুষ্ট করে হয়েছিলেন ঢাকার ডিসি।  ততকালীন প্রধানমন্ত্রীর খুব ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তা তার কথার বাইরে গেলেই চালু করতেন ডিপি। আর নিজের বড়পদের ক্ষমতা দেখিয়ে জুনিয়র কর্মকর্তা দের শাস্তি নিশ্চিত করতেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অন্তত গোটা বিশেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারী তার রোষানলের শিকার। আপাদমস্তক ভালো মানুষের মুখোশধারী এই কর্মকর্তা  শ্যালকের মাধ্যমে লন্ডনে গড়ে তুলেছেন রিয়েল এস্টেট ব্যাবসা। শুধু তাই নয় জার্মানি তেও আছে বিশাল অর্থের সাম্রাজ্য। বর্তমানে তার মেয়ে আর মেয়ের জামাই এটি দেখাশোনা করছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি ও সচিব থাকাকালিন তার সহধর্মিণী   রহিম নামক একজন অফিস সহায়ক এর মাধ্যমে পোস্টিং বানিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ২৬০ কোটি টাকা।

ঢাকার ডিসি  থাকাকালীন তিনি শুধু এল এ শাখা থেকে নিয়েছেন প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।  নারীলোভী এই কর্মকর্তা তার উদ্দেশ্য চরিতার্থ না করতে পারলে প্রায়শ: নানা রকম মিথ্যা অপবাদ  দিয়ে হেনস্থা করেন। সিনিয়র সচিব হবার পর তিনি বিভিন্ন ব্যচের কর্মকর্তা দের নিয়ে গড়েছিলেন এক নিচ্ছিদ্র সিন্ডিকেট।এদিকে সুত্রে জানান,আওয়ামী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যে কয়জন আমলারা প্রানান্ত চেষ্টা করেছিলেন,  তাদের মধ্যে শেখ ইউসুফ হারুন ছিলেন অন্যতম। ফ্যসিস্ট সরকার রাজত্ব করেছে দীর্ঘ ১৫ বছর। এর মধ্যে দীর্ঘ ২০১৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত একাধারে তিনি ঢাকার ডিসি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিজি,  তারপর এপিডি এবং সর্বশেষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ২০১৪ এবং ২০১৮ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী সরকারের অনুগত কর্মকর্তাদের পদায়ন করেন। তার অনুগত না হলেই কপালে জুটত মিথ্যা অপবাদ আর বিভাগীয় মামলার খড়গ।  

ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনো সক্রিয় ভূমিকায়  রয়েছেন।সম্পদের পাহাড় প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন। অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) কে দিতে হবে বলেন জানান সচেতন মহল। তাহলেই তার বদলি বাণিজ্য  অবৈধ সম্পদসহ সকল  অপরাধের বিষয়ে  মুখোমুখি হতে হবে।বাবা ছিলেন দিনমজুর। চাকরি করে শত কোটি টাকার মালিক কীভাবে হলেন। যা বর্তমানে যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

সাবেক সিনিয়র সচিব শেখ ইউসুফ হারুনের মতামত নেয়ার জন্য তার মুটোফোনে কল,খুদে বার্তা দিয়েও তার মতামত পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, একজন কর্মকর্তা কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন, সেটাই আমাদের অনুসন্ধানের লক্ষ্য। এত বড় কর্মকর্তা  তিনি যদি  বিদেশে এতো পরিমাণ টাকা পাচার করেন।তার এতো সম্পদের  মালিক কি করে হয়েছেন। সেটা অনুসন্ধান  হওয়া উচিৎ।সাবেক সিনিয়র সচিব  নিজের নামে সম্পত্তি কম ক্রয় করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। তিনি প্রায় সব সম্পত্তি বউ, শালা, ভাইয়ের মেয়েসহ নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন।

তার পরিচয় তুলে ধরা হল একটি সূত্র থেকে,শেখ ইউসুফ হারুন বাংলাদেশী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা যিনি (বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্ষমতাসীন  আওয়ামী লীগের সময় )। ইতিপূর্বে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।এবং এর পূর্বে ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

শেখ ইউসুফ হারুন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ দায়িত্বাধীন অধিকৃত কার্যালয়(নির্বাহী চেয়ারম্যান)হিসেবে ৭ জুলাই ২০২১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিয়োগ দেন।কাজের মেয়াদ ৬ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ১৪ মে ২০২১ সালে পযর্ন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিগত বিবরণ জন্ম
১৫ মে ১৯৬২ (বয়স ৬২) আশাশুনি উপজেলা, সাতক্ষীরা জেলার সন্তান।প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জীবিকা অর্জন (সরকারি কর্মকর্তা)হারুন ১৯৬২ সালের ১৫ মে পূর্ব পাকিস্তানের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৭৮ সালে,তিনি পাইকগাছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৮০ সালে ব্রজলাল কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন।তিনি যথাক্রমে ১৯৮৪ এবং ১৯৮৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়নে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

বৈষম্য বিরুদ্ধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি  ছাত্র জনতার উপর হামলা মামলায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব‍্যবস্থা করতে হবে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন  একজন কর্মকর্তা কি করে এত পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচার করেন।দেশের ভিতরে ও সম্পদের পাহাড়  রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদকের  অনুসন্ধান করা উচিৎ বলে মনে করি।

তার এলাকার  এক ব‍্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা সত্য।   সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি  এলাকায় এসে  কি ভাবে আওয়ামী লীগের প্রচারণা করতেন। বতর্মানে  প্রোপাগান্ডা ছরিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা  ।এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এত পরিমাণ সম্পদ পাচার করেছেন এটি কোন ছোট্ট অপরাধ নয়।দুর্নীতি কখনো ছোট বড় নয় দুর্নীতি তো দুর্নীতিই সেটি যেমনই হোক। দুদক আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। দুদকের তার দুর্নীতির বিষয়ে আর বিশদ অনুসন্ধান প্রয়োজন।  দুর্নীতির অভিযোগ যে পরিমাণ আসে সেই তুলনায় দুদক অনুসন্ধান করতে পারে না। যদি সকল দুর্নীতি দুদক অনুসন্ধান করতে পারতো তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসত। তবে আমরা আশাবাদী দুর্নীতিবাজদের শিকড় উপড়ে ফেলা সম্ভব সেটি একদিন হবেই।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বলেন,আমরা অনেক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছি।যদি আরো অভিযোগ পাই সেটাও তদন্তের মাধ্যমে আইন আনুগব‍‍্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যারাই অপরাধ করুক না কেন আমাদের অনুসন্ধানে যদি কোনোভাবে প্রমাণিত হয়।’তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব এবং প্রয়োজনীয় যত ব্যবস্থা আছে তা নেব।কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না।