সৎ মায়ের কাছে জুস খেতে চাওয়ায় বিষ খাইয়ে হত্যা

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সৎ মায়ের খাওয়ানো বিষে হাসপাতালে সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ৫ বছর বয়সী শিশু মাহমুদা খাতুন।
কোমল পানিয়’র সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শিশুকে পান করায় তার সৎমা হুমাইরা খাতুন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে শিশুটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে, গত বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় তার পরিবার।
এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন। মাহমুদা কোটচাঁদপুর উপজেলার ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহিন মণ্ডলের মেয়ে। পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে,গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে সৎ মা হুমাইরা খাতুন (২৫) কোমল পানীয়ের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শিশুটিকে খাইয়ে দেন। বিষক্রিয়ার কারণে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
বিষয়টি জানাজানি হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,পরে যশোর জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে শিশুটিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর আবার শিশুটির স্বাস্থ্য অবস্থার অবনতি হলে গত বুধবার তাকে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে গিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির পিতা শাহিন মণ্ডল বলেন, মেয়ে নিজেই জানায় তাকে বিষ খাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
কে খাইয়েছে জিজ্ঞেস করলে জানায় তার সৎ মা অর্থাৎ আমার দ্বিতীয় স্ত্রী হুমাইরা খাতুন কোমল পানীয়র সঙ্গে তাকে বিষ খাইয়ে দিয়েছে। শিশুটির বড় মা (শাহিনের দাদি) সকিনা বেগম জানান, মাহমুদার জন্মের সময় তার মা আফরোজা খাতুন মারা যায়। এরপর থেকে আমিই তাকে লালনপালন করে বড় করেছি। ওর বাবা শাহিন সৌদি আরবে অবস্থানকালে একই গ্রামের জিয়ারুলের মেয়ে হুমাইরাকে মোবাইলে বিয়ে করে।
একমাস পূর্বে সে দেশে ফিরে তাকে বাড়িতে আনে। সে কখনই মাহমুদাকে ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করবে তা আমরা কেউ ভাবতেও পারিনি। আমি হুমাইরার শাস্তি চাই। এদিকে, মর্মান্তিক এই ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই হুমাইরা পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা সৎ মা হুমাইরা খাতুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, হত্যার ঘটনায় শিশুটির পিতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।