রমজান মাসে রাত্রে স্ত্রী সহবাসের নিয়ম জেনে নিন

রমজান মাসে রাত্রে স্ত্রী সহবাসের নিয়ম জেনে নিন

১৮৬. (হে নবী!) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন আপনি তাদের বলুন, আমি এত নিকটবর্তী যে কেউ যখন আমাকে ডাকে, আমি তার ডাক শুনি।* সুতরাং তারাও আমার কথা অন্তর দিয়ে গ্রহণ করুক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক। যাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়।

১৮৭. রোজার রাতে তোমাদের জন্য হালাল করে দেওয়া হয়েছে যে তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে নির্দ্বিধায় সহবাস করতে পারো, তারা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক।

আল্লাহ তায়ালার জানা ছিল, তোমরা নিজেদের সঙ্গে খেয়ানত করেছিলে। এরপর তিনি তোমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়েছেন এবং তোমাদের ত্রুটি ক্ষমা করেছেন। * সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করো এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু লিখে রেখেছেন, তা সন্ধান করো।* আর যতক্ষণ না ভোরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে পৃথক হয়ে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা খাও এবং পান করো।

এরপর রাতের আগমন পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর তাদের সঙ্গে (স্ত্রীদের সঙ্গে) সহবাস করো না। যখন তোমরা মসজিদে এতেকাফ অবস্থায় থাকো, এসব আল্লাহর (নির্ধারিত সীমা)। সুতরাং তোমরা এগুলো লঙ্ঘন করো না।
এভাবেই আল্লাহ মানুষের সামনে নিজের নির্দেশনাবলি সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন। যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা বাকারা)

তাফসির : * রমজান সম্পর্কিত আলোচনার মাঝখানে এ আয়াত আনার উদ্দেশ্য এই হয়ে থাকবে যে ওপরে রমজানের সংখ্যা পূরণ করার কথা বলা হয়েছিল। তার দ্বারা কারো ধারণা জন্মাতে পারত না যে রমজান চলে যাওয়ার পর হয়তো আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সেই নৈকট্য বাকি থাকবে না, যা রমজানে ছিল। এ আয়াত সে ধারণা রদ করে দিয়েছে এবং পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে আল্লাহ তায়ালা প্রতি মুহূর্তে নিজ বান্দার কাছে থাকেন এবং তিনি তার ডাক শোনেন।


* প্রথম দিকে বিধান ছিল, কোনো রোজাদার ইফতার করার পর সামান্য একটু ঘুমালেও তার জন্য রাতের বেলায়ও খাবার খাওয়া জায়েজ ছিল না এবং স্ত্রী সহবাসও বৈধ ছিল না। তখন কারো কারো দ্বারা এ বিধান লঙ্ঘন হয়ে যায়। তারা রাতের বেলা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করে ফেলে। এ আয়াত তাদের সে হুকুম লঙ্ঘনের প্রতি ইঙ্গিত করেছে। সেই সঙ্গে যাদের দ্বারা এ ত্রুটি ঘটে গিয়েছিল, তাদের ক্ষমা করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সে বিধানের কার্যকারিতা রহিত করে দেওয়া হয়েছে।

* অধিকাংশ মুফাসসিরে কোরআন এর ব্যাখ্যা এই করেছেন যে, স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকালে সে সন্তান লাভের নিয়ত থাকা চাই, যা আল্লাহ তায়ালা তাকদিরে লিখে রেখেছেন। কোনো কোনো মুফাসসির এই ব্যাখ্যাও করেছেন যে সহবাস করাকালে কেবল সেই আনন্দই কামনা করা চাই, যা আল্লাহ তায়ালা জায়েজ করেছেন। যেকোনো নাজায়েজ পন্থা তথা বিকৃত ও স্বভাববিরুদ্ধ পন্থা পরিহার করা অবশ্য কর্তব্য।

তাফসিরে তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির