কুয়েটে ছাত্রদল-বৈষম্যবিরোধীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার সূত্রপাত যেভাবে

কুয়েটে ছাত্রদল-বৈষম্যবিরোধীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার সূত্রপাত যেভাবে

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে, যা ক্যাম্পাসের বাইরে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

কুয়েটের কয়েকটি সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। ছাত্রদল আবারও রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে চাইলে, গতকাল (সোমবার) তারা ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করে। এর জবাবে আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে মিছিল বের করে।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা’—এমন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে তাদের সঙ্গে ছাত্রদলের কর্মীদের উত্তেজনা দেখা দেয়, যা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষের সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অস্ত্র হাতে দেখা যায়। সংঘর্ষ কুয়েটের প্রধান ফটক ছাড়িয়ে সংলগ্ন রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদলের পক্ষ নিয়ে বহিরাগতদেরও সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা দাবি করেছেন, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে চায়। শিক্ষার্থী মুজাহিদ ও উৎপল বলেন, ‘ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনীতি চালুর চেষ্টা করছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে হামলা চালিয়েছে এবং আমাদের মাইক কেড়ে নিয়েছে। আমরা চাই, এই ঘটনায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার করা হোক।’

অন্যদিকে, ছাত্রদলের এক নেতা দাবি করেন, তারা কোনো ধরনের উত্তেজনা তৈরি করেননি। বরং তাদের ওপর প্রথম হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একাডেমিক ভবন থেকে ওমর একুশে হলের দিকে যাচ্ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার সময় হঠাৎ আমাদের হুমকি দিয়ে ইফাজের ওপর হামলা চালায়। এরপর আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চুপচাপ চলে যাচ্ছিলাম, কিন্তু হলের কাছে পৌঁছাতেই তারা আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে মারধর করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে চেয়ারে আঘাত করে, মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। পরে আমি কোনোভাবে হলের ভেতরে ঢুকে আত্মরক্ষা করি। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় হাসপাতালে আসতে হয়েছে।