বাংলাদেশে আসছেন ময়ূখ!

ভারতীয় সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জনের মুখোমুখি হলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি মিথ্যে তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি না করে ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার এই সাংবাদিককে (ময়ূখ) সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখার জন্য বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। এ সময় ময়ূক বলেন, তিনি আসবেন, এসে কাচ্চি খাবেন, পায়েস খাবেন, ফিন্নি খাবেন। খেতে খেতে ড. ইউনূসের ইন্টারভিউ করবেন। গতকাল সোমবার রাতে রিপাবলিক বাংলা তাদের ‘জবাব চায় বাংলা’ টকশোতে লাইভ কানেক্ট করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মাদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে। এই টকশোকে ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচ বলে অভিহিত করেন আলোচিত-সমালোচিত সংবাদ উপস্থাপক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ। সাধারণত এই উপস্থাপকের অঙ্গভঙ্গি, স্টুডিওতে লাফিয়ে চলা আর চিৎকার করাই বেশি উপভোগ করেন দর্শক।
তবে এদিন ময়ূখকে বেশ শান্তই দেখা গেছে। তিনি প্রশ্ন করেছেন চিন্ময় কৃষ্ণ ইস্যু, ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার ছবি, সেন্ট মার্টিন বিক্রি করা প্রসঙ্গে। এছাড়া হিন্দুত্ববাদী ও মৌলবাদের প্রশ্ন সহ ঢাকার সব হোলেট-রেস্তোরাঁয় গরুর মাংস রাখা ইস্যুতেও শফিকুল আলমকে প্রশ্ন করেন ময়ূখ। প্রশ্ন ছিল, চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর হয়ে কেনো আইনজীবী দাঁড়াতে পারছে না, ইস্কন সারা পৃথিবীতে ওয়েলফেয়ার অব অপারেশন্স করে, সেখানে ইস্কনকে সন্ত্রাসবাদী বলা হচ্ছে, আপনারা কোনো স্টেটমেন্ট দিচ্ছেন না। জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘আমি অনেকবার স্টেটমেন্ট দিয়েছি, এটা আপনার ভুল জানা।’ বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইস্কনকে ব্যান করার কোনো পরিকল্পনা নেই আমাদের, চিন্ময় কৃষ্ণর ব্যাপারটা ল এন্ড অর্ডার একটা বিষয়। আমরা বলেছি উনি ফেয়ার ট্রায়াল পাবেন।’ ময়ূখ বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হলে সবচেয়ে খুশি হবে ভারত, আপনারা পিছনের দিকে গেলে আমাদের খারাপ লাগবে। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘শুধু চিন্ময় কৃষ্ণের জেলে যাওয়াতে আমরা পিছিয়ে পড়লাম!’ ময়ূখ বলেন, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নির্দিষ্ট প্লে গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করছে বাংলাদেশকে।
আরাকান সেনা যে কোনো সময় ঢুকে পরতে পারে বাংলাদেশে। বর্ডার এড়িয়াগুলোতে মৌলবাদীরা ক্যাম্প করে রয়েছে। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের সেনারা প্রস্তুত আছেন, আমরা কাউকে বাংলাদেশের টেরিটরি ব্যবহার করতে দিবো না। বাংলাদেশকে ব্যবহার করে কেউ কোথাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে পারবে না।’ শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রেস সচিবের একটি ফেসবুক পোস্ট তুলে ধরে ময়ূখ জানতে চান- শেখ হাসিনাকে পার্সন অব দ্য ইয়ার বলেছিলেন। আবার তারই ছবি যুক্ত ডাস্টবিনে ময়লা ফেললেন। একজন নারীকে কতটা সম্মান দিলেন? এমন প্রশ্নেরও কড়া জবাব দেন শফিকুল আলম। তিনি জানান, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় মানুষ হত্যা করতেন, গুম করতেন, অসংখ্য মানুষকে কোনো কারণ ছাড়াই জেলে দিতেন। এ জন্যই তিনি পার্সন অব দ্য ইয়ার ছিলেন। এ সময় ময়ূখ দাবি করেন, শুধু তাকে ফলো করার জন্যই নাকি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয় ৫ জন স্ট্যান্ডবাই রেখে দিয়েছেন। তারা শুধু দেখেন ময়ূখ কীভাবে হাত নাড়েন, কীভাবে হাটেন, কীভাবে দৌড়ান। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি করছে রিপাবলিক বাংলা।’ উল্লেখ্য, ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ মানেই বিনোদনে ভরপুর। সে কী সংবাদ বলছে, কেন বলছে? এর সত্যতা কতোটা? এসবের চেয়ে তার অঙ্গভঙ্গি, স্টুডিওতে লাফিয়ে চলা বেশি উপভোগ করেন দর্শক। আগা নেই মাথা নেই হুটহাট আজগুবিসব তথ্য সামনে হাজির করেন ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার এই সাংবাদিক। বাংলাদেশ থাকবে না, দখল হবে চট্টগ্রাম- এমন সব উদ্ভবট বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশে ব্যাপক- সমালোচিত তিনি।