কলকাতায় ছড়াচ্ছে নতুন ভাইরাস , আসতে পারে বাংলাদেশেও

ভারতের বেঙ্গালুরুর পর এবার কলকাতায়ও ঢুকে পড়েছে চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন ভাইরাস হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। গতকাল সোমবার কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক শিশুর শরীরে শনাক্ত হয় এ ভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা বা কোভিডের মতোই ছড়ায়। এই ভাইরাস সাধারণত শিশু, বয়স্ক এবং ইমিউনোকম্প্রোমাইজড (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম) ব্যক্তিদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে।
শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, এই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। সম্প্রতি চীনে এই ভাইরাসের একটি রূপের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতে উদ্বেগ দানা বেঁধেছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও। বিজ্ঞাপন এইচএমপিভির যত উপসর্গ কাশি, জ্বর, সর্দি জমে নাকবন্ধ— অর্থাৎ সাধারণ ঠাণ্ডা-জ্বরে যেসব উপসর্গে মানুষ ভোগে, সেসব উপসর্গ দেখা যায় এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও। তবে এর সঙ্গে বাড়তি যে দু’টি উপসর্গ যোগ হয়, সেগুলো হলো— শ্বাসকষ্ট ও গলাব্যাথা। এ দু’টি উপসর্গের সঙ্গে কোভিডের সাদৃশ্য রয়েছে। বিজ্ঞাপন আরও পড়ুন অবশেষে ভারতেও ছড়াল এইচএমপিভি ভাইরাস, আক্রান্ত ২ শিশু নতুন রোগ এইচএমপিভির যত উপসর্গ করোনার পর এবার চীনের নতুন আতঙ্ক এইচএমপিভি উপসর্গগুলো তীব্র হয়ে উঠলে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন।
যেভাবে ছড়ায় এইচএমপিভি এইচএমপিভি একটি সংক্রামক রোগ এবং যেভাবে এটি ছড়ায়, তার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে কোভিডের। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোভিডের মতোই হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান, করমর্দন এবং স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগটি। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে সুস্থ ব্যক্তির সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের বিস্তার ঘটায় এইচএমপিভি। যদি কারো ক্ষেত্রে উপসর্গ তীব্র হয়, তাহলে ওই রোগী ব্যাপক কাশি, অতিরিক্ত কফ জমে বুকে ঘড়ঘড় শব্দ এবং শ্বাসকষ্টে ভোগেন। চিকিৎসা এবং টিকা এইচএমপিভির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি বা টিকা নেই। সাধারণত নিউমোনিয়া, করোনা বা ঠান্ডা জ্বরে রোগীকে যেসব ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়, এইচএমপিভির ক্ষেত্রেও সেই চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য থাকে উপসর্গগুলোকে মৃদু থেকে মৃদুতর করা। সাধারণ ঠান্ডা জ্বরের সঙ্গে এইচএমপিভির পার্থক্য সাধারণ ঠান্ডা জ্বর এবং এইচএমপিভির উপসর্গ প্রায় শতভাগ একই।
তবে এইচএমপিভির ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নেয়, যা সাধারণ ঠান্ডা জ্বরের ক্ষেত্রে ঘটে না। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম— এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মহাবিপর্যয় ঘটায় এইচএমপিভি। সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় এইচএমপিভির কোনো স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি কিংবা টিকা না থাকলেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়। এগুলো হলো:- ১. কাশি এবং কফের সময় নিজের নাক-মুখ ঢেকে রাখা ২. বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থেকে বিরত থাকা ৩. নিয়মিত সাবান কিংবা অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা। ৪. হাত না ধুয়ে নিজের চোখ, নাক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা। ৫. অসুস্থ হয়ে পড়লে আইসোলেশনে থাকা এবং লোকজনকে এড়িয়ে চলা।