শেখ হাসিনাকে মোদির ধর্ষনের চেষ্টা, ফটোকার্ড ভাইরাল

শেখ হাসিনাকে মোদির ধর্ষনের চেষ্টা, ফটোকার্ড ভাইরাল

বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি এমন ভুয়া ফটোকার্ডের প্রমাণ মিলেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বিনোদন জগতের তারকাদের নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। দেখা গেছে, একটি নির্দিষ্ট ফেসবুক পেজ থেকে ভুয়া ফটোকার্ড প্রথম প্রচারিত হয় এবং পরে তা দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্টচেক সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ড ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি ও ভুক্তভোগীরা সামাজিকভাবে বিব্রত হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার জানায়,সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে একটি তথ্য ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। যেখানে যমুনা  টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শেখ হাসিনাকে ধর্ষনের চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদি। যা রীতিমতো ভাইরাল।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সূত্রপাতের খোঁজে দেখা যায়, 'ইসলামের আলো'পদ্মজা' নামে একটি ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১২ টা ২৬ মিনিটে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শেখ হাসিনাকে ধর্ষনের চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদি।” উক্ত পোস্টে এ সংক্রান্ত দাবির বিষয়ে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। 

পরবর্তীতে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়েছে কিনা তা জানতে ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখলেও পেজটিতে গত প্রায় এক মাসের ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করেও এমন বিষয়ে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি। 

অনসন্ধানে দেখা যায়, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শেখ হাসিনাকে ধর্ষনের চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদি যমুনা টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং কোনো রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই যমুনা টিভিকে জড়িয়ে ভুয়া এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

ফটোকার্ডটিতে উল্লিখিত ১৩ আগস্ট অনুযায়ী 'যমুনা টেলিভিশন' এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সার্চ করে এই তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। এমনকি কয়েকটি দাবিতে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা 'সময় টেলিভিশন' এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সার্চ করেও এই তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশের এবং ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমেও আলোচ্য তথ্য সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে 'যমুনা টেলিভিশন' এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সার্চ করে আলোচ্য ফটোকার্ডটি যে তাদের নয় এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। 

পোস্টটির স্ক্রিনশট অর্থাৎ যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচ্য বানোয়াট তথ্য সম্বলিত ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। উল্লেখ্য সার্চ করে দেখা গেছে, প্রথমে মিম হিসেবে প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে এটি বিভিন্নভাবে রূপান্তর হয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ হিসেবে প্রচার করা হয়। সুতরাং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য জুড়ে দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের লোগো যুক্ত করে তাদের ফটোকার্ডের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।